ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

২৫ তালেবান হত্যার স্বীকারোক্তি সমালোচনার মুখে প্রিন্স হ্যারি

২৫ তালেবান হত্যার স্বীকারোক্তি সমালোচনার মুখে প্রিন্স হ্যারি

ব্রিটিশ রাজা চার্লস ও প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি ২৫ তালেবানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তার লেখা প্রকাশিত বই ‘স্পেয়ার’-এ এসব কথা তিনি লিখেছেন। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে সেনা হিসেবে কাজ করার সময় ২০১২-১৩ সালে আফগানিস্তানে ফরোয়ার্ড এয়ার কন্ট্রোলার এবং পরে হেলিকপ্টার পাইলট ছিলেন তিনি। বইয়ে প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, আফগানিস্তানে মোতায়েন থাকা অবস্থায় তিনি ৬টি মিশনে অংশ নেন। প্রতিটি মিশনেই শত্রু পক্ষে নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বইয়ে তিনি এই হতাহতকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন।

প্রিন্স হ্যারি লিখেছেন, এটি গর্ব করার মতো এমন কোনও পরিসংখ্যান নয়, কিন্তু আমাকে লজ্জিতও করেনি। যুদ্ধের উত্তাপ ও বিভ্রান্তির মধ্যে আমি ওই ২৫ জনকে মানুষ বলে মনে করিনি। তারা ছিল দাবার বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া ঘুঁটির মতো, কিছু খারাপ লোককে সরিয়ে দেওয়া যাতে ভালো লোকদের তারা হত্যা করতে না পারে।

তবে সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা রিচার্ড কেম্প বলেছেন, প্রিন্স হ্যারির এমন মন্তব্য সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। এর ফলে প্রিন্স হ্যারির নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং কেউ প্রতিশোধ নিতে প্ররোচিত হতে পারে। খবর বিবিসির

কর্নেল কেম্প ২০০৩ সালে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। তিনি বলেন, প্রিন্স হ্যারি তার হাতে নিহত শত্রুসেনার সংখ্যার কথা বলেছেন, এতে তিনি কোনো সমস্যা দেখছেন না। কিন্তু তিনি যেভাবে তালেবানদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তাতে মনে হতে পারে যে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তাদের ‘মানুষের চেয়ে অধম কিছু বলে’ মনে করে। সাবেক সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি মোটেই এমন নয়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এভাবে সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয় না। তবে কনজারভেটিভ এমপি অ্যাডাম হলোওয়ে বলেছেন, কোনো সেনা কতজন শত্রুকে হত্যা করেছেন তা প্রকাশ করা যথাযথ নয়। বর্তমানে কর্মরত অপর এক সেনা বলেছেন, প্রিন্স হ্যারির মন্তব্য মোটেও ‘সেনাসুলভ নয়।’ তবে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

হ্যারির এমন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে তালেবান। তালেবানের ঊর্ধ্বতন নেতা আনাস হাক্কানি এক টুইটে লিখেছেন, ‘হ্যারি! আপনি যাদেরকে মেরেছেন তারা দাবার গুটি নয়, তারা মানুষ ছিল। তাদের পরিবার আছে, যারা তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তলব করবে কিংবা মানবাধিকার কর্মীরা আপনার নিন্দা করবে বলে আমি আশা করি না। কারণ, তারা আপনার জন্য অন্ধ এবং বধির’। যুক্তরাষ্ট্র ও এর ন্যাটো মিত্ররা ২০০১ সালের অক্টোবরে তালেবানকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ এর টুইনটাওয়ারে হামলায় জড়িত ওসামা বিন লাদেন ও অন্যান্য আল-কায়েদা জঙ্গিদের তালেবান আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে এমন অভিযোগে সেখানে এই আগ্রাসন চালানো হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত