মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষার ধারণা নিয়েই সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশসহ অনেকগুলো টেকনিক্যাল কলেজ, ভোকেশনাল স্কুল এবং ট্রেনিং সেন্টারের বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিয়েছে। গতকাল ভাওয়াল রাজবাড়ি মাঠে গাজীপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী চাকরি মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মঈন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দীন মিয়া, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ড. কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন এবং রিপোর্টও হাতে পেয়েছিলেন। সেই রিপোর্টে স্পষ্ট করে কারিগরি এবং ভোকেশনাল শিক্ষার কথা বলা ছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য জাতির পিতা সেই রিপোর্ট বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলামের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, উপাচার্য যথার্থই বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রির যে ধরনের লোকবল প্রয়োজন তা আমাদের জানালে আমরা ইন্ডাস্ট্রির মতো করে প্রস্তুত করে দিব। এটাই আমাদের চাহিদা এবং এটাই আমাদের প্রয়োজন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট জনশক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় আজকের তরুণ প্রজন্মকে সঠিক উপায়ে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। আমার বিশ্বাস এই তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশকে বদলে দিবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হয়ে এই তরুণরা সারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো সনাতন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছি। ইন্ডাস্ট্রি ওরিয়েন্টেড শিক্ষা থেকে আমরা এখনো অনেক দূরে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্ডাস্ট্রি উপযোগী করে গ্রাজুয়েট তৈরি করবে। সরাসরি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে এবং ইন্ডাস্ট্রিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে এমন গ্রাজুয়েট যদি আমরা তৈরি করতে পারি তাহলে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে সত্যিকারের স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হতে পারবো। আমরা আইওটি ও রোবটিক্সের ওপর ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করছি। সাইবার সিকিউরিটি,গেম ডেভেলপমেন্ট,মেশিন ইন্টেলিজেন্স, ডাটা সাইন্স এর মতো বিষয়গুলোর ওপর শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি দিচ্ছি এবং ইন্ডাস্ট্রি উপযোগী করে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কারিকুলামসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে যুক্ত করতে চাই। শিক্ষা পদ্ধতিকে আমরা ইন্ডাস্ট্রি ওরিয়েন্টেড করতে চাই। দুই দিনব্যাপী মেলায় ৪০টির মতো প্রখ্যাত শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। এসময় তিনি সুন্দর আয়োজনের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানকে ধন্যবাদ জানান।