বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন থেকে খুব দূরে নয়; এখন গবেষকরা তাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সেই স্বপ্নকে স্পর্শ করবেন বলে প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। সিলেটে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গবেষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ ধরনের সম্মেলন স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করছেন, বাংলাদেশকে একটি সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ তার স্বপ্ন থেকে খুব দূরে নয়। এখন প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী ও নীতি-নির্ধারকরা, তাদের সৃষ্টিশীল এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করবেন এই স্বপ্ন ছুঁতে। একটি সুখী দেশ গড়তে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন শিক্ষা’বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এ প্রত্যাশা রাখেন মন্ত্রী। বৈশ্বিক মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে এখন দেশ জ্বালানি এবং অন্যান্য সংকটের সম্মুখীন উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি, গবেষক এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বিকল্প সমাধান খুঁজবেন, যা ব্যাপকভাবে আমাদের শিল্পোন্নয়ন এবং জাতীয় উৎপাদনে সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। গবেষকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা গবেষণার মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহযোগিতা করবেন। বিভিন্ন প্রয়োজন এবং সমস্যা সমাধানে শিল্প বিপ্লবে বা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং এটি বাস্তবে রূপান্তরিত করতে আপনারা যার যার ক্ষেত্র থেকে সহযোগিতা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদ আয়োজিত এ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি সফল দেশ, যেটি সহস্রাধিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এখন আমাদের সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ ও জাতি গঠনের জন্য। শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন পর্বে আরও বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম, সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দা কামরুন নাহার এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. সিয়ামুল বাশার। সম্মেলনের আয়োজকরা জানান, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অনুষদের এটি সপ্তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন। গত শনিবার পর্যন্ত এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের প্রকৌশলী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন ও শিক্ষার উন্নয়নের ওপর তাদের গবেষণাপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকবেন। নিবন্ধনকারীদের মধ্য থেকে ১৯০টির বেশি গবেষণাপত্র বাছাই করা হয়েছে। তিন দিনে চারটি প্ল্যানারিসহ ৩৪টি টেকনিক্যাল সেশনে এসব গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে। এতে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ৬৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫০০ জনের অধিক গবেষক অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। নিবন্ধন ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সম্মেলনে প্রবেশ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্ল্যানারি সেশনে প্রধান হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।