সুসংবাদ প্রতিদিন

ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী প্রতিবন্ধী সাহাকুল

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

দেশে উচ্চ ডিগ্রি নিয়েও হতাশায় ভুগছেন এ দেশের লাখ লাখ যুবক। প্রতিদিনই বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। কর্মের অভাবে হতাশা নেমে আসছে অনেকের জীবনে। ঠিক সেখানেই হতাশাকে পাশ কাটিয়ে দুই হাত হারানোর যন্ত্রণাকে ভুলে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন মেহেরপুরের সাহাকুল ইসলাম। মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামে বৈদ্যুতিক লাইনে দুই হাত হারানো সাহাকুল ইসলাম এখন সফল ছাগল পালনকারী। মাত্র পাঁচটি ছাগল দিয়ে শুরু করে এখন ৫০টিরও বেশি ছাগলের মালিক তিনি। যাকে নিয়ে গর্ব করে এলাকার মানুষ।

২০০১ সালে সাত বছর বয়সে ছাত্র থাকাকালীন বিদ্যুৎস্পর্শে দুই হাত হারান সাহাকুল ইসলাম। হাত হারানোর পরও দমে যাননি এ যুবক। নিজেকে দুর্বল না ভেবে বাবার দেয়া পাঁচটি ছাগল নিয়ে নেমে পড়েন মাঠে। ওই পাঁচ ছাগল থেকেই শুরু হয় ভাগ্যবদলের গল্প। এভাবেই চলছে ২০ বছর। প্রতিবছর তিনি ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার ছাগল বিক্রি করনে। এই আয় দিয়েই চলে তার সংসার। বিয়ে করেছেন ১০ বছর আগে। দাম্পত্যজীবনে দুই কন্যাসন্তানের জনক তিনি। সাহাকুল সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমি ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী। তবে আমার ছাগলের ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ, তাই সরকারের কাছে আমার ছাগলের ঘর তৈরির জন্য সরকারি সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সাহাকুলের বাবা মো. জামাত আলী বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর যখন সাহাকুল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে, এরপরই এলাকাবাসী তাকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামানোর কথা বলেন। তখন আমি এসবে কান না দিয়ে সাহাকুলকে ছাগল কিনে দিয়েছিলাম। বর্তমানে সে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী।’

শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হয়েও ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হওয়া সাহাকুলকে যেভাবে পারি আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।’

এ বিষয় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, ‘সাহাকুলের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তার ছাগলের যেকোনো রোগের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।’