ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কক্সবাজারে জুনে আসবে স্বপ্নের ট্রেন, যুক্ত হবে আরেক সাফল্য

দোহাজারি-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের ৯০ ভাগ শেষ
কক্সবাজারে জুনে আসবে স্বপ্নের ট্রেন, যুক্ত হবে আরেক সাফল্য

আগামী জুন মাসে স্বপ্নের ট্রেন আসবে কক্সবাজারে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজারের রামু হয়ে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের কাজ অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। তবে জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার আসবে স্বপ্নের ট্রেন, এমনটি আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে উম্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত, যুক্ত হবে আরেক সাফল্য।

শুধু যোগাযোগই নয়, আধুনিক স্থাপত্যশিল্পে নির্মিত রেল স্টেশনের ভবনগুলোও হবে পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ।

রেলওয়ের প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত হচ্ছে না। চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা করা হয়। দোহাজারি কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ২০২৪ সাল হলেও আমাদের ধারণা আগামী জুনের আগেই কাজ শেষ হবে। এর আগে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই ভাগে কাজটি করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

এ প্রকল্পের কাজ দুটি লটে হচ্ছে। প্রথম লটের সব কাজই শেষ। বাকি কাজগুলো জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে। রেললাইনের বনাঞ্চলের ভেতরে হাতি চলাচলের জন্য দুটি আন্ডারপাস ও সবগুলোর সেতুর স্প্যান ও পিলারের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে একটি আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবন নির্মিত হচ্ছে। কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে রেলপথটিতে। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দিকে পরের স্টেশনটি রামু স্টেশন। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন। চট্টগ্রামের দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন একসময় কক্সবাজারবাসীর জন্য স্বপ্নের মতো হলেও এখন বাস্তবতা। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণাধীন আইকনিক স্টেশন ও রেললাইন ঘুরে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, জুনে কক্সবাজারে আসবে স্বপ্নের রেল। আধুনিক কোচগুলো যুক্ত হবে এই রেলপথে। আমাদের বর্তমানে যে কোচগুলো আছে সেগুলোর জানালা ছোট, এখানে বড় জানালার আধুনিক সুবিধাসমৃদ্ধ কোচ যুক্ত করা হবে। যাতে রেলে বসে পুরো প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত রেল চালু হলে বদলে যাবে কক্সবাজারের চেহারা। যোগাযোগে সৃষ্টি হবে নতুন দিগন্ত। যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজলভ্যতার কারণে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন অনেকগুন বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত