ভারতের পর্যটকবাহী নৌযান ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জলসীমানায় প্রবেশ করবে এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করবে। ‘গঙ্গা বিলাস’ এর পর্যটকদের বাংলাদেশের খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আংটিহারায় অনবোর্ড ইমিগ্রেশন শেষে মোংলা বন্দরে স্বাগত জানানো হবে। নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি ৩ ফেব্রুয়ারি মোংলা বন্দরে তাদের স্বাগত জানাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। গতকাল রোববার নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ভারত কর্তৃক প্রস্তাবিত পরিকল্পিত ক্রুজ পরিসেবা এবং ঐতিহ্যবাহী নৌভ্রমণে সহযোগিতা প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সচিব বলেন, এটা শুধু ট্যুর নয়; এটা প্রটোকলের অংশ। এ ট্যুর আমাদের পর্যটনকে আরো বেশি ফেসিলিটেড করবে। আমাদের আন্তরিকতার কমতি থাকবে না। ব্যবসা, বাণিজ্য ও পারস্পারিক সম্পর্ক আরো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ‘এমভি গঙ্গা বিলাস‘ বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাংলাদেশের জলসীমায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। এসওপি অনুযায়ী প্রটোকল রুটের নাব্যতা রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌপথ ব্যবহারের জন্য ভয়েজ পারমিশন প্রদান এবং ভয়েজ পারমিশনের সার্বিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিআইডব্লিউটিএ। আংটিহারা ও চিলমারীতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনবোর্ড কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং এনবিআর। বাংলাদেশের নৌপথ অতিক্রমকালে জাহাজটিকে যথাযথ নিরাপত্তা বিধান করার পদক্ষেপ নিবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এন্ট্রি পয়েন্ট আংটিহারাতে সব যাত্রী এবং নাবিকদের কোভিড-১৯ সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। নৌযানটির ভয়েজ পরিচালনাকালে সার্বক্ষণিক মনিটর করবে জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি ‘মেসার্স গালফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ’; দর্শনীয় স্থানসমূহ পরিদর্শনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন করবে ট্যুর অপারেটর কোম্পানি ‘জার্নিপ্লাস’। বৈঠকে নৌপরিবহণ, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, নৌরিবহণ অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, বন বিভাগ, ট্যুর অপারেটর কোম্পানি ‘জার্নিপ্লাস’ এবং জাহাজ অপারেটিং কোম্পানি ‘গালফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ’ এর প্রতিনিধিরা সরাসরি এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ‘গঙ্গা বিলাস’ ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে ১৩ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করেছে। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি ‘গঙ্গা বিলাস’ এর যাত্রা উদ্বোধন করেন। ১৯৭২ সালে প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) অধীনে বাংলাদেশ-ভারত নৌপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছিল; যা এখনো কার্যকর আছে। প্রটোকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাত্রী ও পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে বাংলাশে-ভারতের মধ্যে কোস্টাল এবং প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সমঝোতা স্মারকের আলোকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়। এসওপির আওতায় ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস চালুর পর হতে তিনটি ভারতীয় এবং একটি বাংলাদেশি নৌযান চলাচল করেছে।