স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার গুলিতে গুলশানে আহত ১
দুই নেতা আটক
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে গ্লোরিয়া জিন্স কফিস বাংলাদেশ নামে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে প্রকাশ্যে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। ওই দুজনের একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর উত্তর ও অপরজন গুলশান থানা কমিটির নেতা বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার বিকাল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ। তিনি বলেন, বিকাল ৪টার দিকে গ্লোরিয়া জিন্স নামক রেস্টুরেন্টের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অর্থনৈতিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে একজন আরেকজনকে গুলি করেছেন। এ ঘটনায় আমরা জড়িত দুজনকেই হেফাজতে নিয়েছি। তাদের আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধতা, নামণ্ডপরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গুলিতে আহত ব্যক্তির নাম আমিনুল। আর যিনি গুলি করেছেন তার নাম ওয়াহিদ মিন্টু। পুলিশ দুজনকেই আটক করেছে। তবে আমিনুল নামের ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোলাগুলির ঘটনা গুলশান-১ এর গ্লোরিয়া জিন্সের সামনে ঘটলেও এর সূত্রপাত একই এলাকার গুলশান শপিং সেন্টারের আলফা জেনারেল স্টোর নামের একটি দোকান থেকে। ওই দোকানের মালিক হাবিবুর রহমান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি নম্বরে বিকাশ করার জের ধরে ঘটনাটি গোলাগুলি পর্যন্ত গড়ায়।
মো. শহীদ নামে ডিএনসিসি মার্কেটের একজন সিকিউরিটি গার্ড বলেন, আরিফ নামে এক ব্যক্তি ওই বিকাশের দোকানে এসে ৩ থেকে ৪টি নম্বরে ৭৫ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। দোকানি হাবিবুর আরিফের কাছ থেকে টাকা না নিয়েই নম্বরগুলোতে ৭৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। টাকা পাঠানোর পর তিনি আরিফের কাছে টাকা চান। তখন আরিফ টাকা না দিয়ে বলেন, আপনি একটু দাঁড়ান, আমার লোক টাকা নিয়ে আসছে। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করার পর টাকা নিয়ে কেউ না আসায় আরিফকে আটক করা হয়।
আটক অবস্থায় আরিফ একজনকে ফোন দিয়ে দোকানিকে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, আমার বাবার সাথে কথা বলেন। তখন ফোনে আরিফের বাবা পরিচয়ে একজন বলেন, আমার ছেলে (আরিফ) কি করেছে, এটাতে আমার কোনো দায়দায়িত্ব নেই।
ওই দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান বলেন, আরিফকে আটক রাখার সংবাদ পেয়ে তার দুই সহযোগী ডিএনসিসি মার্কেটে আসেন। তার মধ্যে একজনের কাছে অস্ত্র ছিল। তার নাম ওয়াহিদ মিন্টু। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি। তিনি আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে এসে ভয় দেখাতে ১ থেকে ২ রাউন্ড গুলি করেন। গুলি করার পর স্থানীয়রা শুটারকে জড়িয়ে ধরেন। এসময় দুইপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একসময় তারা (আরিফের দুই সহযোগী) দৌড়ে গ্লোরিয়া জিন্সের দিকে যেতে যেতে আরও ২ থেকে ৩ রাইন্ড গুলি ছুড়তে থাকে। আরিফ এবং আরিফের সহযোগীরা গুলশান থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ওই দুই নেতার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি বলেন, তারা যদি কোনো সামাজিক পর্যায়ে কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে সংগঠন এর দায় নেবে না। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।