ভেপিং তামাক পরিহার সহায়ক নীতিমালা দাবি

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া থেকে ভেপিংকে (ই-সিগারেট) বাদ দেয়া ও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেন্ডাস্টা)। একই সঙ্গে সংগঠনটি ভেপিংকে তামাক পরিত্যাগ সহায়ক পণ্য হিসেবে মূল্যায়ন করে পৃথক একটি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘দেশের আইন সংশোধনে বিদেশি দাতাগোষ্ঠীর প্রভাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বেন্ডাস্টার সভাপতি মাসুদ উজ জামান। লিখিত বক্তব্যে মাসুদ উজ জামান বলেন, ভেপিং নিয়ে কোনো আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হলে আমরা হব তার অন্যতম অংশীজন। আমাদের সাথে আলোচনা না করে এতদূর এগিয়ে যাওয়াটা অযৌক্তিক। এ নিয়ে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দুইবার চিঠি পাঠানো সত্ত্বেও আমাদের সাথে তারা কোনো আলোচনায় বসেনি। বিশ্বব্যাংকের তথ্যের বরাত দিয়ে জামান বলেন, বাংলাদেশে ২০১০ সালে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ ছিল, যা ২০২০ সালে কমে ৩৪.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমরা মনে করি ভেপিং নিষিদ্ধ করা হলে ধূমপায়ীর হার ফের বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হবে। এমন বাস্তবতায় ভেপিং নিষিদ্ধ করা মানে প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পরিপন্থি। এছাড়া ভেপিং নিষিদ্ধের বিষয়ে সবসময় ভারত ও থাইল্যান্ডের উদাহরণ টানা হয়। কিন্তু ভারতে ভেপিং নিষিদ্ধ করার পরও দেখা যায় বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে এখনো বেআইনিভাবে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যারা সম্প্রতি থাইল্যান্ডে গেছেন তারাও বলেছেন সেখানে অনেকেই রাস্তায় প্রকাশ্যে ভেপ করছে। তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ভেপিং নিয়ে সরকারকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ, যেখানে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ অন্যান্য উন্নত দেশের সরকার ধূমপান ছাড়ার অন্যতম বিকল্প হিসেবে ভেপিংকে বেছে নিচ্ছে, সেখানে তা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। তামাকবিরোধী এনজিওগুলো কোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ছাড়াই ভেপিং নিয়ে ভুল মন্তব্য করে যাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থাগুলোর টাকার লোভে এসব পণ্যে নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছে। এনজিওগুলোর দেখানো পথে চললে দেশের উপকারের তুলনায় অপকার বেশি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। জামান আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলা হয় এ আইনের নাম তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন। যেখানে ভেপিংয়ের সাথে তামাকের কোনো সম্পর্কই নেই, সেখানে ভেপিংকে কেন জড়ানো হলো যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক কনজুমার চয়েস সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভেপিংকে উৎসাহিত করা গেলে বাংলাদেশে ৬২ লাখের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছাড়তে পারবেন। ভেপিং নিষিদ্ধ করে ধূমপান হ্রাসের এ সম্ভাবনাকে কেন নষ্ট করা হবে যে দেশগুলো ভেপিং বন্ধ করেছে অনেক ক্ষেত্রেই সেখানকার প্রাপ্তবয়স্ক প্রাক্তন ধূমপায়ীরা যারা ধূমপান ছেড়ে ভেপিং শুরু করেছিল তাদের ধূমপানের হার বেড়ে গেছে। ভেপিং বন্ধ করলে যদি বাংলাদেশে তামাক সেবন বৃদ্ধি পায়, এর দায়ভার কে নেবে বেন্ডাস্টা সভাপতি জোর দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে তামাক পরিত্যাগ সহায়ক পণ্যগুলোকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বৈধ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বেন্ডাস্টা সহ-সভাপতি আনিসুজ্জামান নাসের খান।