ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আবারও অস্বস্তিতে ডিমের বাজার

আবারও অস্বস্তিতে ডিমের বাজার

কিছুদিন স্বস্তিতে পার হওয়ার পর আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হালিতে ডিমের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। কোনো কারণ ছাড়াই কারসাজির মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। কোথাও কোথাও ১৫৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। আর সুপারশপগুলোতে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। খুচরায় ছোট আকারের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। আর একটু বড় আকারের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। কোথাও কোথাও ডিমের হালি ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সুপারশপগুলোতে ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। অন্যদিকে হাঁসের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে ডিমের হালি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। আর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফার্মের মুরগির হালি বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকায়। হাঁসের ডিমের হালি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। দাম বাড়ার বিষয়টি বাজার মনিটরিং প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) স্বীকার করেছে। টিসিবি বলছে, এক মাস আগে ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ছিল ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। ডজন ছিল ১০৫ টাকা। সেখান থেকে হালিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়ে আজ ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। অর্থাৎ ১০ শতাংশের বেশি দাম বেড়েছে। কমলাপুর বাজারে আসা ক্রেতা রঞ্জিত মল্লিক বলেন, ডিমের বাজারে এখন খেলা চলছে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি দুই ডজন ডিম কিনেছি ১১০ টাকা করে ২২০ টাকায়। আজ কিনতে এসেছি, দোকানদার বলছে, ১৪০ টাকা ডজন। ১২-১৪ দিনে ডিমের ডজনে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। মহাখালী ওয়ারলেসের ব্যবসায়ী আরিফুল আলম জুম্মান বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডিমের ডজন বিক্রি করেছি ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। সেই ডিম এখন বিক্রি করছি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। সাইজে একটু বড় ডিমের ডজন বিক্রি করছি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, এক সপ্তাহ আগে এক ডজন ডিম বিক্রি করেছি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। এখন বিক্রি করছি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। ডজনে ২০ টাকা বেড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী অগর মণ্ডল বলেন, খামার থেকে এখন ডিম কম আসছে। ডিমের সরবরাহ কম, এ কারণে দাম বেড়েছে। কম দামে আনতে পারলে ভোক্তাদের কম দামে ডিম দিতে পারব উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা তো খামারিদের কাছ থেকে কম দামে আনতে পারছি না, মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির পর যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে। ফলে খামারিদেরও ডিম বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারি এই ব্যবসায়ী বলেন, ফার্মের মুরগির সাদা-লাল ডিমের হালি বিক্রি করছি ৪০ টাকা। আর ডজন বিক্রি করছি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর হাঁসের ডিমের হালি বিক্রি করছি ৭০ টাকায়। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও ওষুধের দাম বেড়েছে। এ কারণে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে খরচ কমাতে অনেকে মুরগি কমাচ্ছে। এতে চাহিদার তুলনায় ডিমের সরবরাহ কমেছে। তারা আরও বলছেন, খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে পোলট্রি খাত এখন ধ্বংসের মুখে। আমাদের শিল্প ধ্বংস হলে আরও বেশি দামে ডিম কিনতে হবে। বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, গত মাসে ডিমের দাম অনেকটা স্থিতিশীল ছিল। এখন একটি চক্র আবারও ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছে। নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে এই চক্রটিকে থামাতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত