আদালতের আদেশ অমান্য করায় এর ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৪ জানুয়ারি তাকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত রেকর্ডসহ তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। এর আগে, গত বুধবার দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ওই বেঞ্চও আগামী ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. জেআর খান রবিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরে আইনজীবী জেআর খান রবিন বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৭ জানুয়ারির মধ্যে নিয়োগ দিতে বলেছিলেন। কিন্তু এখনও শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তলব করেছন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অ্যাডভোকেট মো. জেআর খান রবিন ওই দিন বলেছিলেন, কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছেন, কারাগারগুলোতে ৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন। এর আগে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৪১টি পদের মধ্যে এই ১১২ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে মাত্র চিকিৎসক রয়েছে ১০ জন। ওই প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট কারাগারগুলোতে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন। আইনজীবী জেআর খান রবিন জানান, ২০১৯ সালের ২৩ জুন এক আদেশে আদালত সারাদেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। ওই নির্দেশ অনুসারে কারা মহাপরিদর্শক ব্রি. জে. একেএম মোস্তফা কামাল পাশার পক্ষে ডেপুটি জেলার মুমিনুল ইসলাম একটি প্রতিবেদন দেন। এ বিষয়ে রুল শুনানির ধারাবাহিকতায় সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।