ঢাকা ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাকৃবি প্রক্টরের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা

বাকৃবি প্রক্টরের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) তিন শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় প্রক্টরের অপসারণসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের (একাংশের) বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারীরা।এ সময় গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের (একাংশের) সাধারন সম্পাদক প্রফেসর ড. পূর্বা ইসলাম দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরদের অবিলম্বে অপসারণ, গঠিত তদন্ত কমিটির বিষয় ও কমিটি পুনর্গঠন এবং দোষিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি প্রফেসর ড. পূর্বা ইসলামের কক্ষে ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদের নেতৃত্বে এক পরিক্ষার্থীকে মারধর করে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় তিন শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর ড. জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. লুৎফুর হাসান মন্টুর সাথে স্বাক্ষাৎ করলে তিনি ১৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রক্টর ও সহকারি প্রক্টরদের অপসারণ করে তদন্ত কমিটির গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ওই সময় পেরিয়ে গেলেও ভিসি কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করে আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আমরা অবস্থান করি। কিন্তু দিনভর চেষ্টা করেও ভিসির সাথে রেজিস্ট্রার কোনো ধরনের সংযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষক প্রফেসর আফরিন মোস্তারিন বলেন, যোগদানের পর থেকে বেশির ভাগ সময় ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন প্রো-ভিসি নেই, অথচ তিনি কাউকে দায়িত্বও দেন না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। ভেটেনারি অনুষদের শিক্ষক প্রফেসর নাসরিন সুলতানা জুয়েনা বলেন, একজন শিক্ষককের কক্ষে ঢুকে তিনজন নারী শিক্ষককে আহত করার ঘটনাটি প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে। শিক্ষকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি। এই অবস্থায় শিক্ষকরা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। আমরা অবিলম্বে প্রক্টরসহ সহকারী প্রক্টরদের পদত্যাগ চাই। তিনি আরও বলেন, একটি পক্ষ এই ঘটনাকে মিথ্যা দাবি করে বাম বলে প্রপাগান্ডা করছে, যা ওই শিক্ষকদের হীনমন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এদিকে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের (একাংশের) বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় দিনভর সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা ছিল লক্ষ্যণীয়। খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের (একাংশের) শিক্ষকরা তাদের তিন দফা দাবি নিয়ে দিনভর আমার কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছিল। আমি চেষ্টা করেছি, ভিসি স্যারের সাথে যোগাযোগ করতে, কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে তাদের দাবির বিষয়টি ভিসি স্যারকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. লুৎফুর হাসান মন্টুর বক্তব্য জানা যায়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত