অন্যরকম

যে হ্রদে পাখি নামলেই পাথর হয়

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রহস্যময় পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রয়েছে কত শত রকমের আশ্চর্যজনক জিনিস। তেমনই এক হ্রদের কথা জানা গেছে। যে হ্রদে নামলেই পাখিরা মারা যায়। শুধু তাই নয়, মারা যাওয়া পাখি পাথর আকৃতিও ধারণ করে। ভয়ংকর এই হ্রদটির নাম নেট্রন। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার উত্তর প্রান্তে রয়েছে এই হ্রদ। এটি একটি লবণাক্ত হ্রদ। এই হ্রদের আশপাশে কোনো জনবসতি নেই। দৈর্ঘ্যে ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২২ কিলোমিটার নেট্রন হ্রদে এওয়াসো নায়গ্রো নদীর পানি এসে পড়ে। আশপাশের বেশ কয়েকটি উষ্ণ প্রস্রবণের পানিও এই হ্রদে পড়ে। ফলে বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ এই হ্রদের পানি। আগে এই হ্রদ নিয়ে অনেক কথা শোনা গেলেও প্রামাণ্য তথ্য কিছু মেলেনি কোনো দিনই। ২০১১ সালে নিক ব্রান্ডট নামে এক বন্যপ্রাণ চিত্রগ্রাহক নেট্রন হ্রদের সামনে গিয়ে চমকে গিয়েছিলেন। আগে এই হ্রদ নিয়ে অনেক কথা শোনা গেলেও প্রামাণ্য তথ্য কিছু মেলেনি কোনো দিনই।

২০১১ সালে নিক ব্রান্ডট নামে এক বন্যপ্রাণ চিত্রগ্রাহক নেট্রন হ্রদের সামনে গিয়ে চমকে গিয়েছিলেন। হ্রদের পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল অসংখ্য পশুপাখির দেহ। ব্রান্ডট জানান, সেগুলো দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনো পাথরের মূর্তি সাজিয়ে রাখা! হ্রদের পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল অসংখ্য পশুপাখির দেহ। এর নেপথ্যের রহস্য জানতে শুরু হয় গবেষণা। কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল পাখিগুলোর? কেনই বা ‘পাথরে’ পরিণত হয়েছিল? পরে জানা যায়, এই হ্রদের পানিতে সোডিয়াম কার্বোনেট এবং সোডার পরিমাণ অত্যধিক। প্রচুর সোডিয়াম ও কার্বোনেটযুক্ত ট্র্যাকাইট লাভা দিয়ে প্রায় ২৬ লাখ বছর আগে প্লিসটোসিন যুগে তৈরি হয়েছে নেট্রন হ্রদের তলদেশ।

পরীক্ষায় জানা গেছে, হ্রদের পানি অস্বাভাবিক ক্ষারধর্মী (পিএইচ ১০.৫)। ত্বককে পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। যা পশুপাখির পক্ষে অসহনীয়। বছরের বেশির ভাগ সময় হ্রদের পানির তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ফলে পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর তলদেশে পড়ে থাকে পানির মতো তরল লাভা। সোডিয়াম ও কার্বোনেটের জন্য হ্রদে জন্ম নেয় সায়োনোব্যাকটিরিয়া নামে অণুজীব। এই অণুজীবের শরীরে লাল রঞ্জক থাকে। ফলে হ্রদের পানি লাল রঙের হয়। সোডিয়াম ও কার্বোনেটের জন্য হ্রদে জন্ম নেয় সায়োনোব্যাকটিরিয়া নামে অণুজীব। এই অণুজীবের শরীরে লাল রঞ্জক থাকে। ফলে হ্রদের পানি লাল রঙের হয়। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই রঙেই আকৃষ্ট হয়ে পশুপাখি হ্রদে নামে। কিন্তু পানির অতিরিক্ত ক্ষারধর্মীতার জন্য সেগুলোর মৃত্যু হয়। সূত্র : ইন্টারনেট