ঢাকা ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের স্বাস্থ্য বিভাগের সেবা

বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের স্বাস্থ্য বিভাগের সেবা

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের পর টঙ্গী তুরাগ নদীর পাড়ে এ বছর দুটি পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ব ইজতেমায় দুটি পর্বে আগত মুসল্লির সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ। আগত মুসল্লিরা ঠান্ডা, কাশি, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ও গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস এবং শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইজতেমার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ করে তত্ত্বাবধায়ক, শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতাল এবং সিভিল সার্জন, গাজীপুর ও ঢাকাকে সরবরাহ করেছে। সিভিল সার্জন, গাজীপুরের তত্ত্বাবধানে হোন্ডা গেট, বাটা গেট, মুন্নু গেটে (অলিম্পিয়া স্কুল মাঠ) এবং বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশেষ ক্যাম্পসহ মোট চারটি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। সিভিল সার্জন, ঢাকার তত্ত্বাবধানে তুরাগ নদীর পশ্চিম তীরে বালুর মাঠ সংলগ্ন ও তুরাগ নদীর পশ্চিম তীরে পানির পাম্প সংলগ্ন দুইটি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিচালনা করা হচ্ছে। বিশ্ব ইজতেমা ২০২৩ উপলক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অলিম্পিয়া স্কুল মাঠ, টঙ্গী, গাজীপুরে আস্থায়ী কোভিড-১৯ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত ক্যাম্পের মাধ্যমে ফ্রি স্যাম্পল সংগ্রহ, এন্টিজেন্ট টেস্ট, আরটিপিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বার্তা প্রদান করছে। বিশ্ব ইজতেমার আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য মোট বারটি মেডিক্যাল টিম, ছয়টি বিশেষায়িত মেডিক্যাল টিম, একটি কন্ট্রোল রুম টিম, একটি স্বাস্থ্য শিক্ষা টিম, একটি প্যাথলজি টিম, একটি রেডিওলজি টিম, একটি ফার্মাসিস্ট টিম ও এগারোটি স্যানিটারি ইন্সপেক্টর টিম গঠন করা হয়েছে। উক্ত মেডিক্যাল টিমগুলোয় ১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ৫১ জন চিকিৎসক, ৪ জন ডেন্টাল সার্জনসহ ফার্মাসিস্ট, এসএসসিএমও, এমটি (ল্যাব), এমটি (রেডিও), এইচআই, এএইচআই, অফিস সহায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ১৯৬ জন কাজ করছেন। এছাড়াও বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে ময়দানের আশপাশে খাবারের দোকান পরিদর্শনে ২৫ (পঁচিশ) জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর খাদ্য নিরাপত্তা পরিদর্শক হিসেবে কাজ করছেন। প্যাথলজি পরীক্ষার জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ল্যাবরেটরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ও ল্যাব সহকারী পদায়ন করা হয়েছে। ইজতেমায় গুরুতর রোগী বহনের জন্য সার্বক্ষণিক ১৪ চৌদ্দটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়োজিত রয়েছে। প্রথম পর্বে আগত মুসল্লিদের মধ্যে উক্ত অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প ও হাসপাতালের মাধ্যমে মোট ১৭ হাজার ৬২৬ জনকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। এর মাঝে চারজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়াও খাবারের দোকানগুলোয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ২৯টি মামলা এবং ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মনিটর, সুপার ভিশন, ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় কাজের জন্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। সিভিল সার্জন, গাজীপুর-এর সভাপতিত্বে ৫ (পাঁচ) সদস্যবিশিষ্ট জেলা স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটি প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল, টঙ্গী, গাজীপুরের সভাপতিত্বে ৫ (পাঁচ) সদস্যবিশিষ্ট শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা ২০২৩ উপলক্ষ্যে মুসল্লিদের মাঝে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও তথ্য সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন ও লিফলেট প্রস্তুত করে বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত