রাজধানীর বাজারদর

বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম, মাংস আগের মতো

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ছুটির দিন গতকাল সকালে বাজার করতে গিয়ে অনেকেই মাছ আর শীতের সবজির দাম বাড়তি দেখে অবাক হয়েছেন। এসময় তারা বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে শীতের প্রতিটি সবজির দামও বাড়তি। সব সবজিতেই অতিরিক্ত ১০ থেকে ২০ টাকা গুণতে হচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা বলেছেন, মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই দামে পরিবর্তন এসেছে। গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীতের কারণে মাছ সরবরাহ কম হচ্ছে, ফলে মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়া ব্যবসায়ীরা শীতের দোহাই দিয়ে বলেছেন, গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীতের কারণে ফসল তুলতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বাজারে। পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ব ইজতেমার ১ম পর্বের কারণে টঙ্গীতে প্রচুর পরিমাণে সবজির চাহিদা ছিল। সে সময় সবজির দাম বেড়েছে তা আর কমেনি। আগামীকাল দ্বিতীয় পর্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত সবজির দাম চড়া থাকতে পারে। তারা জানান, গ্রামাঞ্চলে শীত কিছুটা কমে আসলে বাড়বে সবজির সরবরাহ, তখন ফের কমতে পারে সবজি দাম।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব ধরনের মাছের দাম তুলনামূলক বেড়েছে। তবে গরু, খাসি, মুরগি, ব্রয়লারের দাম আগের মতোই আছে। গতকালের বাজারে কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকায়, মলা ৩৬০ টাকায়, শোল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাঙাশ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় কৈ ২৬০ টাকায়, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকায়, টেংরা ছোটগুলো ৫০০ আর বড় ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হয়। শীত ও ইজতেমার অজুহাতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। বাজারে প্রতি পিস ফুল কপি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৩০ টাকা। একইভাবে বাঁধাকপিও প্রতি পিস বিক্রি হয়ে ৪০ টাকায়, ব্রুকলি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৪০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৩০, খিরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ফুলকা প্রতি আটি ১৫-২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মৌসুম না হওয়ায় বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায় আর পটল প্রতি কেজি ১২০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হয়।

সবজি ও মাছের দাম বাড়লেও গরুর মাংস আগের মতই ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একইভাবে খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় এবং ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। সপ্তাহের বাজার করতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে সবজির দাম খুব বেড়েছে, শীতকালীন সব ধরনের সবজির দাম অন্য সময় কম থাকলেও আজ অনেক বেশি। সেই সঙ্গে মাছের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে। বাজারে সব দোকান থেকেই সবজি আর মাছের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। তুলনামূলক কম দাম হওয়ার কারণে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বাজারে সবচেয়ে বেশি কিনে পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া আর রুই মাছ। কিন্তু বাজারে এসব মাছের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতারা বাজারে এসে এত দাম বৃদ্ধি দেখে অস্বস্তিতে পড়েছেন।

মাছ বিক্রেতারা বলেছেন, গ্রামাঞ্চলে শীতের কারণে মাছ ধরা যাচ্ছে না। এছাড়া কুয়াশাসহ শীতের কারণে মাছ পরিবহণ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ কম, এ কারণেই মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।

অন্যদিকে সব ধরনের সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলেন, গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে কৃষকরা ফসল তুলতে পারছেন না। যে কারণে সরবরাহ কমেছে। তবে শীত কিছুটা কমলে আগের মতো পচুর সবজি সরবরাহ হবে। তখন দাম কিছুটা কমে আসবে। তারা বলেন, প্রচুর পরিমাণে সবজি ইজতেমা ময়দানের দিকে চলে গেছে। যে কারণে রাজধানীতে সবজি কম এসেছে। দাম বাড়ার পেছনে এ বিষয়টিও দায়ী। আগামীকাল শেষ হচ্ছে ইজতেমা। তারপর থেকে সবজির দাম আরও কমে যাবে।