এখনকার বাবা-মায়েদের সব থেকে বড় অভিযোগ সম্ভবত এটাই যে, তাদের শিশুরা ঠিকমতো খেতে চায় না। শুধু অভিযোগই নয়, বরং এটি চিন্তার বিষয়ও। কারণ শিশু যদি একদম খেতেই না চায় তবে তার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছাবে কীভাবে?
ফল দেখলেই নাক কুঁচকানো, দুধের কথা শুনলেই ছুটে পালিয়ে যাওয়া! এদিকে আবার ফাস্টফুড যেমন পিজ্জা, বার্গার, চিপস, কোল্ড ড্রিংকস হলে শিশুকে বলে দিতে হয় না। অন্যদিকে চাউমিন, পেস্ট্রি, চিপস এনে হাজির করলে, নিমিষে শেষ। এসব খাবার তারা খুব আগ্রহ করেই খায়। কিন্তু এসবে থাকে না প্রয়োজনীয় পুষ্টি। এর সমাধানে বাবা-মাকে নিতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তার সঙ্গে চাই একটু বুদ্ধি আর একটু স্ট্র্যাটেজি। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-
অবসরে অথবা ছুটিতে আপনার বাচ্চাকে নিয়ে সারা সপ্তাহের খাবারের মেনু প্ল্যান করুন। বাচ্চাকে নিয়ে খেলার ছলে হেলথ ফুড সংক্রান্ত বই, পত্রপত্রিকা বা ওয়েবসাইটও একসঙ্গে ঘাটাঘাটি করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে কথাগুলো যেন পড়ার বইয়ের মতো না হয়। প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে স্বাস্থ্যকর কিন্তু মুখরোচক খাবার, যেমন ফ্রুট সালাদ, মিল্ক শেক, ভেজিটেবল পরোটা রাখতে হবে। এছাড়া সপ্তাহে একদিন তার পছন্দের জাঙ্কফুডও খেতে দেয়া যেতে পারে।
শীতের সময় বিভিন্ন রকমের সবজি দিয়ে গরম সুপ তৈরি করে দেয়া যেতে পারে। শসা, টমেটো, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য ফল মিশিয়ে স্ন্যাকস হিসেবে সার্ভ করা যায়। বাড়িতে চকোলেট, টফি, মিষ্টি বা পেস্ট্রি জাতীয় খাবার ফ্রিজে স্টক করে খাওয়ানো যেতে পারে।
বাজার করার সময় আপনার বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। বাজার করার সময় তাকে বিভিন্ন ধরনের মাছ, মাংস, ফল, সবজি ইত্যাদি চিনতে সাহায্য করুন। গল্পের ছলে বিভিন্ন খাবারের রং, আকার, গন্ধ, স্পর্শ বুঝতে সাহায্য করুন। এছাড়া রান্না করার সময় ওর মতামত নিন। দেখবেন নিজের পছন্দ করা খাবার মজা করেই খাবে।
বাচ্চাদের ডায়েটে ক্যালসিয়াম একটি অত্যন্ত জরুরি উপাদান। টোনড দুধ ঠান্ডা করে তার পছন্দমতো ফ্লেভার মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে। এছাড়া টিফিনে কাস্টার্ড, পুডিং, চিজ স্যান্ডউইচ, ভেজিটেবল ক্যাসারোল জাতীয় মুখরোচক খাবার দিন। স্কুল থেকে ফিরে সফট ড্রিঙ্কের বদলে ফ্রেশ ফ্রুট জুস অথবা লেবুর শরবত তৈরি করে খাওয়ানো যেতে পারে।
শিশুর বাড়ন্ত বয়সে উৎসাহ ও প্রশংসা খুব ভালো কাজ করে। তাই শিশু খেতে না চাইলে তাকে বকাঝকা না করে তার বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করুন। পাশাপাশি তার খেলাধুলা, লেখাপড়া কিংবা বুদ্ধিরও প্রশংসা করুন। এতে শিশুর মন ভালো হবে এবং সে খুশি মনে খেতে চাইবে। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে, খাবার ভালোভাবে শেষ করাটাও বুদ্ধিমানের কাজ।