সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলন আরও জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপি। গতকাল রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি ও জোটের লিয়াজোঁ কমিটির মধ্যে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।
সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য সরকার এবং তার এজেন্টরা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তারা মিডিয়াতে বলুন, গল্প করে বলুন, বিভিন্ন রকমের গল্পও তৈরি করবে। এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না। আমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় হচ্ছে একটাই সেটা হচ্ছে- জনগণকে আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ করে, আরো সম্পৃক্ত করে এই ভয়াবহ দানবকে সরানো। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার পতনের লক্ষ্যে আমরা যে গণআন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিএনপির পূর্বের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। এছাড়া পরবর্তীতে কী কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে- সে বিষয়েও আলোচনা করেছি।
যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্য দলগুলোর সঙ্গেও দ্রুত বৈঠক হবে জানিয়ে ফখরুল বলেন, সেসব বৈঠকে আগামী চার ফেব্রুয়ারি যে কর্মসূচি রয়েছে সেই কর্মসূচিকে সফল করা এবং পরবর্তীকালে কী কর্মসূচি গ্রহণ করব সেগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, চলমান আন্দোলনে সবাই যেন শরিক হন। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা যেন আরও বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করতে পারি, সেই ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তির যে কর্মসূচি সেটাকে অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য কাজ করছি। আমরা চারটি কর্মসূচি পালন করেছি। কর্মসূচিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচিকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যেতে চাই। আন্দোলনকে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, বৈঠকে সেটার নীতিগত ও কৌশলগত বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করা। এই ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরাবার জন্য, বিভ্রান্ত সৃষ্টির জন্য শত্রুপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকা এবং ঢাকা মহানগরের মধ্যে কীভাবে তৎপরতা বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির পরে পরবর্তী ধাপে কী কর্মসূচি দিতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বরকত উল্লাহ বুলু ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- জোটটির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম।