ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চ্যাটজিপিটি আমাদের ভবিষ্যৎ

চ্যাটজিপিটি আমাদের ভবিষ্যৎ

সাম্প্রতিক সময়ে নেট দুনিয়ায় কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের কৃত্তিম চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি পুরো বিশ্বকে নতুন করে নাড়া দিয়েছে। এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি আপনাকে নিমিষেই সব প্রশ্নের নিখুঁত এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন উত্তর প্রদান করবে। চ্যাটজিপিটি এরই মধ্যে টেক জায়ান্ট গুগল, মাইক্রোসফটসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে টেক্কা দিচ্ছে। বিবিসির তথ্য মতে, মাইক্রোসফট এ খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। ওপেনএআই প্রতিষ্ঠানের চ্যাটজিপিটি ২০২২ সালের নভেম্বরে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর কয়েক দিনেই এর ব্যবহারকারী প্রায় ১.৫ মিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছায়, যা এত অল্পসময়ে ফেইসবুক, টুইটারও ব্যবহারকারী পায়নি।

কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার এ প্রভাবে প্রযুক্তি খাতসহ নানা বেসরকারি খাতে কর্মরতদের আরও একবার ভাবিয়ে তুলছে। গুগল এরই মধ্যে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে মাইক্রোসফট গুগলের আগেই তাদের বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল।

তবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটির প্রভাব মধ্যম এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ ভারত, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে প্রযুক্তিবিদদের ধারণা। কারণ, ভারতে প্রায় ৩ কোটি লোক এবং বাংলাদেশে প্রায় ৭ লাখের মতো ফ্রিল্যান্সার ঝুঁকিতে পড়বে। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গুটিকয়েক লোক ছাড়া খুব দক্ষ প্রযুক্তিবিদ দেখা যায় না, সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষরা তাদের বাজার হারাতে পারে, যেসব কাজ করে তারা অর্থ উপার্জন করত, যেমন লোগো ডিজাইন, অনুবাদ, সার্ভেসহ বেশিরভাগ কাজই এখন বিনামূল্যে এবং নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করে দেবে ওপেনএ আইয়ের চ্যাটজিপিটি। তাই যে কোনো প্রতিষ্ঠানই আর চাইবে না অর্থ খরচ করতে। শুধু এসব কাজ করেই ক্ষ্যান্ত হবে না চ্যাটজিপিটি, আপনার কবিতা শুনতে মন চাইলে নিমিষেই আপনাকে কবিতা রচনা করে দেবে এই চ্যাটবট। এমনকি ব্যবহারকারীর চাকরির জন্য বায়োডাটা, পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর নিখুঁতভাবে প্রদান করবে চ্যাটজিপিটি। মজার ব্যাপার হলো আপনি একই প্রশ্ন ভিন্ন সময়ে জিজ্ঞেস করলে আপনাকে ভিন্ন এবং নির্ভুল উত্তর প্রদান করবে এই চ্যাটবট। এছাড়া এই চ্যাটবটটি ব্যবহারকারীর আদেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার চাহিদা মতো বিভিন্ন সফটওয়্যার এর নির্ভুল কোডিং করে দেবে, যা ছোট ছোট প্রোগ্রামিং প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য হুমকিস্বরূপ। এ প্রযুক্তির পরিধি আরও বাড়লে অনেক কোম্পানিকে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রকাশিত এক রিপোর্ট অব্যশ বলেছে ভিন্ন কথা, সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে চ্যাটজিপিটি কখনো মানুষকে চাকরিচ্যুত করবে না, মানুষের অভাব চ্যাটজিপিটি দিয়ে পূরণ করা যাবে না। কারণ, হিসেবে তারা বলছেন, এ চ্যাটিং বটটি সবসময় নির্ভুল তথ্য প্রধান করতে পারবে না, এ সফটওয়্যারটি যেহেতু ২০২১ সাল পর্যন্ত তথ্য নিয়ে করা তাই এতে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাবে না, টেলিফোন, ই-মেইল আবিষ্কারের পরে ও যেমন চিঠির আদান প্রধান এখনো রয়ে গেছে ঠিক তেমনি ওপেনএআইয়ের এ প্রযুক্তি মানবসম্পদকে আরও দক্ষ ও কর্মময় করে তুলবে বলেই মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত