রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে প্রস্তুত হচ্ছে ন্যাটো

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। জোটের সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান রব বাউয়ার সম্প্রতি নিজেদের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম নিউজউইক।

ন্যাটোর সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান রব বাউয়ার রয়্যাল নেদারল্যান্ডস নৌবাহিনীর একজন অ্যাডমিরাল। পর্তুগিজ টেলিভিশন চ্যানেল আরটিপিকে তিনি বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কৌশলগত উদ্দেশ্যগুলো ইউক্রেনকে ছাড়িয়ে গেছে। এটা হয়তো এখন কিয়েভের প্রতিবেশীদের দিকে প্রসারিত হতে পারে।

তিনি বলেন, রাশিয়া ন্যাটোভুক্ত কোনো একটি দেশে হামলা চালিয়ে রেডলাইন অতিক্রম করলে ন্যাটো তার প্রতিক্রিয়া জানাবে।

এদিকে চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞরা ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সম্পৃক্ততার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। রোববার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবা টাইমস বলেছে, ইউরোপে ‘আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের’ বিপদ বাড়ছে। চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞ এবং টিভি ভাষ্যকার গান ঝংপিং রোববার গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, ‘কিয়েভ সব সময় ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ের জন্য তার ন্যাটো মিত্রদের টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে। তবে এর আগে ইউক্রেনকে সহায়তা দেয়া ন্যাটো দেশগুলো বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।

এদিকে ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা জোরদার করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। সংঘাতময় দেশগুলোতে অস্ত্র রপ্তানি না করার নীতি পুনর্বিবেচনা করারও মত দেন তিনি।

স্টলটেনবার্গ তার এশিয়া সফরের প্রথম ধাপে শিউলে পৌঁছান। ইউক্রেন সংঘাত ও চীন থেকে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার মুখে আঞ্চলিক গণতান্ত্রিক মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অংশ হিসেবে তিনি জাপানও সফর করবেন।

তিনি রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইউক্রেনের আরো গোলাবারুদের জরুরি প্রয়োজন উল্লেখ করে কিয়েভকে আরো সাহায্য করার জন্য গতকাল শিউলের প্রতি আহ্বান জানান।

ন্যাটোপ্রধান জার্মানি ও নরওয়ের মতো দেশগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন ‘সংঘাতময় দেশগুলোতে অস্ত্র রপ্তানি না করার জন্য দীর্ঘস্থায়ী নীতিগুলো ন্যাটো গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পর সংশোধন করে।

তিনি শিউলের চেই ইনস্টিটিউটে বক্তৃতাকালে বলেন, ‘আমরা যদি স্বাধীনতা, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, যদি আমরা স্বৈরাচার ও সর্বগ্রাসীভাবে জিততে না চাই তবে তাদের অস্ত্র দরকার।’

দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বব্যাপী একটি ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ এবং সম্প্রতি ন্যাটো-সদস্য পোল্যান্ডসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে বিপুল সংখ্যক ট্যাঙ্ক বিক্রির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার আইনে সক্রিয় সংঘাতের দেশগুলোতে অস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ। যে কারণে শিউল বলেছে যে, কিয়েভকে সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ করা কঠিন। তবে অনাক্রাত্মক এবং মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া গত বছর ন্যাটোতে তার প্রথম কূটনৈতিক মিশন চালু করেছে।

স্টলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনের সংঘাত কখন শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়, পুতিন আরো যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং উত্তর কোরিয়াসহ দেশগুলো থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করছেন। পিয়ংইয়ং মস্কোতে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিয়েভকে মস্কোর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করার জন্য মার্কিন সেনাবাহিনীর অন্যতম শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক অস্ত্র ৩১টি আব্রামস ট্যাঙ্কের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।