পানির উপরে সবজি ও মশলা চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে খুলনার তেরখাদা এলাকার ভূমিহীন ও কর্মহীন কৃষকরা। কম খরচে ও কম সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় নতুন এ পদ্ধতিতে সবজি ও মশলা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে এলাকার যুব সমাজ।
জানা যায়, ২১ হাজার একরের এই বিলে সারা বছর কচুরিপানা, হোগলাপাতা ও শ্যাওলা দিয়ে ভরা থাকত। বছরের অধিকাংশ বিলে পানি জমে থাকায় এখানে কোনো ধরনের ফসলাদি হয় না। সরকারের উদ্যোগে ৩ বছর ধরে এ এলাকায় ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি ও মশলা চাষাবাদ করা হচ্ছে। ভাসমান এ পদ্ধতিতে বর্তমানে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও মশলা চাষ করা হচ্ছে। ভাসমান এ পদ্ধতিতে চাষ করতে কোনো ধরনের সার ব্যবহার করা হয় না বলে বাজারে এর দাম এবং চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
কৃষক মো. আকতার বলেন, একটা সময় ছিল এই বিলে পচুর মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাছ কমতে থাকে। একটা সময় আর মাছ তেমন পাওয়া যেত না। আমরা অনাহারে দিন পার করতাম। কিন্তু এখন ভাসমান পদ্ধতিতে মাছের সঙ্গে সবজি ও মশলা চাষ করে এখন আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। ভাসমান একটা বেড তৈরি করতে তিনটি বাঁশ লাগে। খালে বাঁশের ভেলা ফেলে তার ওপরে প্রয়োজন মতো কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করা হয়। একটা বেড থেকে ৭ থেকে ৮ মাস সবজি ও মশলা চাষ করা যায়। এ পদ্ধতিতে সবজি চাষে খরচ কম এবং পরিশ্রম কম হয়। বাজারে এ সবজির অনেক চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাওয়া যায়। তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় সরকারের ‘ভাসমান সবজি ও মশলা চাষ’ প্রকল্পের আওতায় গত ৩ বছর ধরে এ এলাকায় ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ভাসমান সবজি ও মশলা চাষ হচ্ছে। যার কারণে এলাকার মানুষ পাচ্ছে ভেজাল ও বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি।