ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার : ৫ জন গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বামীর সঙ্গে দেখে করতে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী (২৯)। মোহাম্মদপুর থানার বছিলা এলাকার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- বিল্লাল হোসেন (২৫), আল-আমিন হোসেন (২৬), সবুজ (২৬), রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২৬)।
গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক। এর আগের দিন রাজধানীর গাবতলী, ডেমরা, বছিলা ও ভোলার তজুমুদ্দিন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি এইচএম আজিমুল হক বলেন, চার মাস আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বামীর কাছে সন্তানদের রেখে গ্রামের বাড়ি যান ওই নারী। এর মধ্যে কিছু না জানিয়ে স্বামী তাকে তালাক দেন। গত ২৫ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসেন তিনি। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান। আগের ভাড়া বাসায় স্বামী-সন্তানকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। বাড়ির মালিক, ভাড়াটিয়ারা কেউ তার স্বামী-সন্তানদের ঠিকানা দিতে পারেনি। বছিলা চল্লিশফিট, ফিউচার হাউজিং, গার্ডেনসিটি হাউজিং, স্বপ্নধারা হাউজিং ও এর আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুজি করে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বছিলা চল্লিশফিট তিন রাস্তার মোড় থেকে গাবতলী যাওয়ার জন্য তিনি একটি রিকশায় ওঠেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, রিকশাওয়ালা ওই নারীকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বছিলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরাতে থাকেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। ওই নারীকে তার স্বামীর বাসা খুঁজে বের করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করেন। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে বছিলা ফিউচার টাউনের একটি জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে সঙ্গীরাসহ রিকশাচালক ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শ্রমিকদের জন্য তৈরি একটি অস্থায়ী টিনের ঘরে নিয়ে যান। হত্যার হুমকি দিয়ে পাঁচ জন তাকে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে এলাকায় দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড ও লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যান। এরপর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশে খবর দিলে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়।
ডিসি বলেন, এ ঘটনায় গত ২৭ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা হয়। তবে ভুক্তভোগী আসামিদের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তাদের কাছ থেকে ওই নারীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার পাঁচজন ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। দুইজন আশপাশে অবস্থান করে সহযোগিতা করে। পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা চলছে। ওই নারীর স্বামীর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। তবে শিগগিরই তার সন্ধান পাওয়া যাবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।