আন্তর্জাতিক মরুর শহর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বা দুবাইয়ে রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। বিশাল ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যের জন্য সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে এই শহর। নৌকার পালের আকৃতির দৃষ্টিনন্দন ভবন আর সাগরে তালগাছ আকৃতির সুদৃশ্য স্থাপনায় বিলাসবহুল হোটেল করে পর্যটকদের মন জয় করেছে শহরটি। কিন্তু অনেকেই জানেন না, ইউএইর সবচেয়ে ধনী আমিরাত আবুধাবিতে রয়েছে একটি ‘স্বর্ণের হোটেল’। তিন বিলিয়ন ডলার খরচ করে ২০০৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই হোটেলটি নির্মাণ করা হয়। সেই হোটেলের প্রকৃত নাম ‘আমিরাত প্যালেস’। অনেকেই নাম শুনলে প্রথমে এই হোটেলকে একটি প্রাসাদ মনে করে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো প্রাসাদ নয়, এটি হচ্ছে একটি পাঁচ তারকা হোটেল। বিশ্বের সবচেয়ে দামি হোটেল এটা।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোটেলের লবি, রুম ও হলওয়েতে রয়েছে এক হাজার স্বর্ণভর্তি ঝাড়বাতি। এর আলো গিয়ে সোনায় মোড়া সিলিংয়ে পড়ে। ভারতের কেরালা রাজ্যের প্রকৌশলী মনোজ কুরিয়াকোসে আমিরাত প্যালেসের এসব সিলিংয়ের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন। তার দলের কাজ হলো, দুই হাজার বর্গমিটারের সিলিংটিকে ২২ ক্যারটের সোনার পাত দিয়ে সাজিয়ে রাখা। এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এক বর্গমিটার সিলিংয়ে ৫০টি সোনার পাত বসাতে হয়। আর মনোজ কুরিয়াকোসেকে বদলাতে হয় চার-ছয় বর্গমিটার সোনার পাত। প্রতি বছর এই সোনার পাত বদলাতে হোটেলটির খরচ হয় প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বেশি।
কুরিয়াকোস জানান, সিলিংয়ে যা দেখা যাচ্ছে, সবই সোনার পাতের। পাতগুলো খাঁটি সোনার। এগুলো আনা হয় ইতালি থেকে। পাতগুলোকে পিটিয়ে তা পাতলা করে তার পিঠে বিশেষ ধরনের আঠা লাগিয়ে সিলিংয়ের গায়ে সাঁটানো হয়।
হোটেলে আসা অতিথিরা স্বর্ণের এই কারুকাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। কুরিয়াকোস বলেন, ‘অতিথিরা সিলিং দেখার পর থমকে যান। তারা নানা প্রশ্ন করেন। তথ্য জানতে চান।’ বিশ্বের আর কোনো হোটেলে এত পরিমাণ সোনার পাত সিলিংয়ে লাগানো নেই বলে জানান মনোজ কুরিয়াকোস।