তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রতিযোগিতা না করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জনে বিশ্ব নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এখন প্রতিযোগিতার নয়, পারস্পরিক সহযোগিতার সময়। আমরা আত্মকেন্দ্রিক হতে চাই না- উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে স্ব-নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা চাই আমাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনামীয় নেতাদের নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে। প্রতিমন্ত্রী গতকাল বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের এলইএপি সম্মেলনের মূলমঞ্চে মিনিস্ট্রিরিয়াল সেশনে ‘তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান। দুবাইভিত্তিক পরামর্শক সংস্থা এমকান করপোরেশন সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা ইসাক অ্যাপলবাউমের সঞ্চালনায় এ প্যানেলে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী এইচই রুদিয়ানতারা এস. স্ট্যাট আলোচনায় অংগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের অনন্য শক্তি জনসম্পদ উল্লেখ করে পলক বলেন বোস্টন কনসাল্টেন্ট গ্রুপের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমাদের দেশে এখন ৩ কোটির মতো মধ্যম আয়ের ভোক্তা রয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৫ কোটিতে উন্নীত হবে। কারণ, ওই সময়ে মধ্যে তাদের ডিজিটাল ডিভাইস কেনার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাই এই বাজার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির প্রেরণা শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আর তিনি বিশ্বাস করেন সরকার নিজে ব্যবসা করবে না, ব্যবসায়ের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আমাদের তরুণরা এখন চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এজন্য আমরা তাদের মেন্টরিং করছি। প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ইউনিভার্সিটি ইনকিউবেটর সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন দেশে স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশের স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড গঠন করা হয়েছে। এটা দেশে প্রথম এবং একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড যা বাংলাদেশ সরকার স্পন্সর করেছে যার মূলধন ৫০০ কোটি টাকা। স্টার্টআপের বিকাশে সরকারের নানা উদ্যোগে ভাল সুফল পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন বর্তমানে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে, যাদের অধিকাংশই পরিচালনা করছে তরুণরা। গত ১০ বছরে ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিদেশি উদ্যোগ তহবিলসহ ১৫ লাখ প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন নীতি সহায়তা প্রদানের কারণে বিদেশি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্ব ব্যবসা করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজার বিদেশি আইসিটি উদ্যোক্তাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। উল্লেখ্য, প্রতিমন্ত্রী সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ডিজিটাল কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন’ (ডিসিও) এরই দ্বিতীয় সাধারণ অধিবেশনের সাত দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরবে রয়েছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।