বর্ণাঢ্য আয়োজনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) দশম সমাবর্তন গতকাল বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ভারতের হিমাচল প্রদেশের শোলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অতুল খোসলা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান। ভ্যালিডেকটোরিয়ান বক্তব্য প্রদান করেন আইন বিভাগের গ্র্যাজুয়েট সাইফুল ইসলাম।
এবারের সমাবর্তনে ৬ হাজার ১৬৪ জন গ্র্যাজুয়েটকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ হলো। এখন অর্জিত শিক্ষা দেশ ও দশের কল্যাণে কাজে লাগানোর পালা। আপনাদের অর্জিত শিক্ষা সমাজ ও দেশের কোনো কাজে না আসলে সেটা হবে অনেক বড় অন্যায়। যা হবে আপনাদের বাবা-মা, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত প্রচেষ্টার একটি বিরাট অপচয়। সুতরাং, প্রতিজ্ঞা করুন, আপনারা যা পেয়েছেন, তার বহুগুণ দেশকে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন। সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখবেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এরই মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ, গুণগত মান, শিক্ষা প্রদান সংক্রান্ত সব কর্মক্ষমতা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শর্ত পূরণ করে স্থায়ী সনদ ও অর্জন করেছে। নাসা আয়োজিত আন্তর্জাতিক হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ প্রতিযোগিতায় ১৬২টি দেশের ২ হাজার ৮১৪ দলের মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘টিম ডায়মন্ডস’ ‘মোস্ট ইন্সপিরেশনাল’ প্রোজেক্ট হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে ১২৫টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ২১টি ইভেন্টের মধ্যে ১২টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য ও ৭টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এসব অর্জন এটাই প্রমাণ করে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু লেখাপড়ায় নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রেও সমান পারদর্শী। শুধু তাই নয়, বিশ্বখ্যাত টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং, কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং, ইউআই গ্রীন ম্যাট্রিক্স র্যাংঙ্কিংয়েও বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান।
স্বাগত বক্তব্যে ডিআইইউ চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবনকে অনুঘটক মনে করেছে এবং এর একাডেমিক সিস্টেমে সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র উদ্ভাবনী বিষয়ক কোর্স চালু করেছে, একাডেমিয়া-শিল্প সম্পর্ক জোরদার করেছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করেছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে একীভূত করেছে, পাঠ্য বহির্ভূত কার্যক্রমের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতরণ কার্যক্রম ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্যের গল্প উল্লেখ করে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, নাসা স্পোর্টস এপ চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় গ্লোবালী চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, এইউএপি’র ১৫তম সাধারণ সম্মেলনের আয়োজন করেছি, জব উৎসব সম্মেলনের আয়োজন করেছি- যা ছিল একটি ইউএনডিপি-স্পন্সর ইভেন্ট এবং যেখানে ২০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান ছাত্রদের কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করতে অংশ নিয়েছিল। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বর্তমানে ‘ডোয়ার্স এবং লিডারস’ বিকাশের ওপর সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়েছে- যারা এ গ্রহের জন্য একটি টেকসই বর্তমান এবং প্রতিশ্রুতিশীল ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্ভাবন এবং সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে।
