ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মার্কিন আকাশে ‘রহস্যজনক বস্তু’

মার্কিন আকাশে ‘রহস্যজনক বস্তু’

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের আকাশে একটি রহস্যজনক ‘অজ্ঞাত বস্তুকে’ গুলি করে করে ধ্বংস করেছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। আকৃতিতে একটি ছোট গাড়ির সমান এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য হুমকি হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করে হোয়াইট হাউজ।

গত সপ্তাহে একটি বিশালাকৃতির চীনা নজরদারি বা গোয়েন্দা বিমান নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দেয় ওয়াশিংটন- বেইজিংয়ের মধ্যে। ওই বেলুনটিকে আবহাওয়া ও গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল, তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় কক্ষপথ বিচ্যুত হয়ে পড়ে। তবে এটিকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। এর মধ্যেই আবারও একটি বস্তু শনাক্তের দাবি করে ধ্বংস করা হলো। এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘অজানা বস্তুটি একটি ছোট গাড়ির আকৃতির। তবে এটি কোথা থেকে আসলো এবং এর কাজ কী তা এখনও অস্পষ্ট মার্কিন প্রশাসন।’

‘গত শনিবার যে বেলুনটি ধ্বংস করা হয়েছিল তার চেয়ে এটি অনেক ছোট। বস্তুটি আলাস্কার উত্তর উপকূলের ৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল।

জন কিরবি সাংবাদিকদের আরও জানান, ‘ভূপাতিত করার আগে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হয় যে, এর ভেতরে কোনো মানুষ ছিল না। রহস্যজনক বস্তুটি গুলি করার আগে আমাদের কয়েকটি যুদ্ধবিমান এর আশপাশ দিয়ে উড়ে যায়।’ আলাস্কার আকাশে উড়তে থাকা অজানা বস্তুটি ধ্বংস করার ঘটনাকে ‘সফলতা’ বলে চিহ্নিত করেছেন জন কিরবি। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি প্যাট রাইডার নিশ্চিত করে বলেন, একটি এফ-২২ যুদ্ধবিমান দিয়ে সাইডওয়াইন্ডার দিয়ে গুলি করা হয়। এদিকে চীনের স্পাই বেলুন ইস্যুতে দেশটির বিরুদ্ধে এবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ চীনের ছয়টি কোম্পানির বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এসব কোম্পানি দেশটির সামরিক আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, বেইজিংয়ের সামরিক আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টাকে জোরদার করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে এয়ারশিপ ও বেলুনসহ মহাকাশ কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত ছয়টি চীনা কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে উত্তর আমেরিকার ওপর দিয়ে উড়ে আসা সন্দেহভাজন গুপ্তচর বেলুনের বিষয়ে চীনের তীব্র নিন্দা করেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। তার আগে শনিবার মার্কিন সামরিক বাহিনী চীনা বেলুনটি গুলি করে ধ্বংস করে। বেলুনটি আলাস্কা থেকে দক্ষিণ ক্যারোলিনা পর্যন্ত দিনব্যাপী উড়ার পর সেটি ধ্বংস করা হয়। এতে তীব্র আপত্তি জানায় বেইজিং। খবরে বলা হয়েছে, কালো তালিকায় যুক্ত করা চীনা কোম্পানিগুলো সরকারি অনুমোদন ছাড়া মার্কিন সরঞ্জামাদি ও প্রযুক্তিপণ্য সংগ্রহ করতে পারবে না। গত শুক্রবারের বিবৃতিতে মার্কিন শিল্প ও নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালান এস্তেভেজ বলেন, উঁচুতে উড়তে সক্ষম বেলুন ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে পিপলস রিপাবলিক অব চায়না। তিনি আরও বলেন, আজকের এই পদক্ষেপ স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের ক্ষতি করতে চায়- এমন কোনো সংস্থা বা কোম্পানিকে মার্কিন প্রযুক্তি প্রাপ্তি থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে। নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- বেইজিং নানজিয়াং এরোস্পেস টেকনোলজি কোম্পানি, চায়না ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি গ্রুপ কর্পোরেশন, ৪৮তম গবেষণা ইনস্টিটিউট, ডংগুয়ান লিংকং রিমোট সেন্সিং টেকনোলজি কোম্পানি, ঈগলস মেন এভিয়েশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ কোম্পানি, গুয়াংজু তিয়ান-হাই-জিয়াং এভিয়েশন টেকনোলজি কোম্পানি, শানঝি ঈগলস মেন এভিয়েশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, চীনের সামরিক বাহিনী হাই অল্টিটিউড (উচ্চণ্ডউচ্চতার) বেলুন ব্যবহার করে গোয়েন্দা তথ্য এবং অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থের পরিপন্থি। তবে চীন এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেছে, প্রধানত আবহাওয়া সংক্রান্ত গবেষণার উদ্দেশ্যে বেলুন ছাড়া হয়েছে। সূত্র : বিবিসি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত