স্বল্প খরচ আর কম সময়ে অধিক লাভের আশায় মসুর ডাল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাষিরা। গত এক দশকে উচ্চ ফলনশীল নানা জাতের বীজ বাজারে আসায় কৃষক অন্য ফসলের পরিবর্তে ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়েছে মুসুর ডাল চাষে। উচ্চ ফলনশীল এসব বীজে ফলন বেশি। উৎপাদন খরচ কম। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চৌগাছা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছরে উপজেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে মসুর ডাল চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও অর্জন হয়েছে ৫৫০ হেক্টর জমি। কৃষকদের গম চাষে ফিরে আসা ও ভুট্টা চাষের কারণে ৮০ হেক্টর জমিতে কম চাষ হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। যা চাষ হয়েছে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ফলনের আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। ক্ষেতভর্তি ফুল ও ফল দেখে এবার কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাঁসির ঝিলিক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের ব্যাপারে চাষিরা আশাবাদী। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মসুর চাষে অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় কম খরচে যথা সময়ে মসুরের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ৫-৬ হাজার টাকা। এছাড়া সরকারি বীজ, সার ও অন্যান্য সহযোগিতার কারণে খরচ কমেছে। উপজেলার ১১ ইউনিয়নের প্রায় সব জায়গায় কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন ফুলে ফুলে ভরে আছে। উপজেলার সুখপুকুরিয়া, স্বরূপদাহ, নারায়ণপুর, পাশাপোল, ধুলিয়ানিস হাকিমপুর, পাতিবিলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে দেখা যায়, গাছগুলো বেশ বড় হয়ে উঠেছে। এখন মসুর ক্ষেতে কীটনাশক এবং ওষুধ প্রয়োগের কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত চাষিরা। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের চাষি লাভলুর রহমান, মনটু, হোসেন আলী বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় মসুর ডাল চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম। দামও ভালো পাওয়া যায়। একটু দেরিতে বিক্রি করতে পারলে বেশি লাভবান হওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, মসুর ডাল একটি লাভজনক ফসল। মসুর ডাল চাষের জমিতে পরবর্তী সময়ে পাট চাষ করার জন্য সার খরচ খুবই কম হয়। মসুর ডাল চাষের কারণে জমিতে প্রচুর জৈব সারের সৃষ্টি হয়। এর ফলে পাটের ফলন খুব ভালো হয় এবং জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়।