ফের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র হচ্ছে
বললেন মির্জা ফখরুল
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে আবারও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভয়াবহ রকমের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব। এর আগে সেখানে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রকৃতপক্ষে ’৫২ সালের এই একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের নতুন জাতিসত্তা নির্মাণের যে চেতনা, সেই চেতনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেদিন আমাদের মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের জন্য ছাত্রসমাজ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে সেদিন বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় যে নতুন চিন্তা-চেতনা সৃষ্টি হয়েছিল এবং সত্যিকার অর্থেই নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের বীজ অঙ্কুরিত সেদিন হয়েছিল।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও জাতি তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। চিন্তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কথা বলার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। লেখার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
বইমেলায় বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনী বন্ধ করা ও প্রকাশনীকে স্টল না দেয়ায় বাংলা একাডেমির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, কী দুর্ভাগ্য যে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাংলা ভাষা ও বিকাশের জন্য; চিন্তা-চেতনা বিকাশের জন্য। মুক্তচিন্তার জন্য। সেই বাংলা একাডেমি অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্টল বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়ে, একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন করে শপথ নিতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব। জনগণের কথা বলার অধিকার, মুক্তচিন্তার অধিকার, জনগণের লেখার অধিকার আমরা নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠা করব।
দুই দিনের কর্মসূচি : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি মহাসচিব জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল পৌনে ৬টায় কালো ব্যাচসহ নিউমার্কেট এলাকায় বলাকা সিনেমা হলের সামনে দলের নেতা-কর্মীদের জমায়েত শুরু হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের মাজার জিয়ারতের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার বেলা ২টায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা শুরুর আগে জাসাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
এ ছাড়া সারা দেশে মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও বিভিন্ন ইউনিটে সকাল ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। স্থানীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন স্থানীয় নেতারা।
ওই দিন সারা দেশে দলের প্রতিটি ইউনিট স্থানীয় ব্যবস্থা অনুযায়ী ভাষাশহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের মুনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের মাওলানা সেলিম রেজা, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।