সুসংবাদ প্রতিদিন

‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষে সফল রেজাউল

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রাজবাড়ী সদরের দাদশী ইউনিয়নে ইউটিউবে ভিডিও দেখে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ করেছেন কৃষক রেজাউল সেখ। রোপণের ৮০ দিনের মধ্যে তার ক্ষেতে বাতাসে দোল খাচ্ছে কালো ধান। পেয়েছেন বাম্পার ফলনও। তার এই সফলতা দেখতে ছুটে যাচ্ছেন অন্যান্য কৃষক। ফলে কালো ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। জানা যায়, ৩০ বছর ধরে ধান, পাট, গমসহ নানা রকমের সবজির চাষ করেন রেজাউল সেখ। চলতি মৌসুমে ইউটিউব দেখে আগ্রহী হয়ে ব্ল্যাক রাইস জাতের ধানের বীজ সংগহ করে নিজ জমিতে রোপণ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। দেশি জাতের ধানের মতো একই প্রক্রিয়ায় এই ব্ল্যাক রাইস চাষ করা হয়। বাজারে এ ধানের চালের ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষের প্রস্তুতি রয়েছে তার। উচ্চ মূল্যের এই কালো ধানের চাষ এবং উপকারিতার কথা শুনে অনেক কৃষক এখন রেজাউল সেখের ক্ষেত দেখতে আসছেন। অন্যান্য ধানের তুলনায় দাম কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও অনুপ্রাণিত হচ্ছেন ব্ল্যাক রাইস চাষে। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি কালো ধান ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্লাভিনয়ের্ড বা এনথোসায়ানিন খুব বেশি পরিমাণে থাকায় এই চালের রঙ কালো হয়। এই উপাদানটির কারণে ক্যানসার, হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে প্রতিহত করতে সহায়তা করে। কালো চাল ক্যান্সার প্রতিরোধে অনন্য। এই চালে আয়রন বেশি, কিন্তু শর্করা কম। আর এই চালের ভাত অনেক বেশি পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর। ব্ল্যাক রাইস পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও বাজারে দাম বেশি। এই ধানের ভাত খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কালো ধানে প্রচুর এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কৃষক রেজাউল সেখ বলেন, ইউটিউবে দেখে আগ্রহী হয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমি এই ধান চাষ শুরু করি। ব্ল্যাক রাইসের চাল একটু মোটা। এই ধান দুর্যোগ সহনশীল বলে প্রমাণিত। কৃষি অফিস সব সময় পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা করেছে। তারা আমার এই ধানকে বীজ হিসেবে সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ধানের বীজ ৫শ টাকা কেজিতে কিনেছি। চাল ৩শ টাকা কেজি বিক্রি করতে পারলে আমি লাভ করতে পারবো। আগামীতে আমি আরো বেশি কালো ধান বা ব্ল্যাক রাইসের চাষ করব। স্থানীয় কৃষক আফজাল সেখ বলেন, কালো ধানের যে চাহিদা দেখতে পাচ্ছি, তাতে আশা করা যাচ্ছে এই কালো ধানের চাল ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হবে। এই ব্ল্যাক রাইস চাষাবাদে আমি নিজেও আগ্রহী হয়েছি। সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. বশির আহম্মেদ জানান, নানাবিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই কালো ধান ও চাল বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগামীতে অধিক চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মৌসুমে রাজবাড়ীতে কয়েকজন কৃষক ১ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ব্ল্যাক রাইসের চাষ করছেন। নতুন এই ব্ল্যাক রাইস জাতের ধান চাষাবাদে আগ্রহী কৃষকদের নানাবিধ পরামর্শ দিচ্ছে জেলা কৃষি বিভাগ।