ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

প্রান্তিক কৃষকের হাটে কোটি টাকার বেচাকেনা

প্রান্তিক কৃষকের হাটে কোটি টাকার বেচাকেনা

ভোরের আলো কেবল ফুটছে, ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দু নুয়ে পড়ার অপেক্ষায় এমন সময় কৃষক রশিদুল ইসলাম ব্যস্ত ক্ষেতের বাঁধাকপি সংগ্রহে। গন্তব্য নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বঙ্গবন্ধু চত্বর সংলগ্ন বিরাট সবজির পাইকারি হাট। অত্র অঞ্চলের অন্যতম বড় সবজি বাজার হিসেবে খ্যাত এ হাট। যার প্রধান বৈশিষ্ট্য কৃষকগণ সরাসরি উৎপাদিত সবজি এখানে পাইকারি দামে বিক্রি করেন। প্রতিদিন এই বাজারে সবজির হাট বসে, কোন বন্ধের দিন নেই। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা এই বাজারে সবজি নিয়ে আসেন। এখানে প্রতিদিন কোটি টাকার মতো সবজি বেচাকেনা হয় বলে জানিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। সবজি সংরক্ষণাগার তৈরি ও বাজারজাত সহজতর করতে সরকারি উদ্যোগ নেয়া হলে এখানকার সবজি ব্যবসায়ী ও কৃষকরা আরো উপকৃত হবেন। সম্প্রতি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক আর পাইকার মিলে একাকার। দরদাম হচ্ছে। বিক্রীত সবজি বস্তাভর্তি করে উঠানো হচ্ছে অটোরিকশা, ভ্যান, পিকআপ আর ট্রাকে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা বেচাকেনা হয়ে থাকে। দূর-দূরান্তের পাইকারেরা অটোরিকশা, পিকআপ, ট্রাক নিয়ে আসেন সবজি কেনার জন্য। সবজি বিক্রি করতে আসা উপজেলার বালাগ্রামের বাসিন্দা নূর নবী বলেন, ‘দুই যুগ ধরে চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। উৎপাদিত সবজি এই হাটে নিয়ে আসি। প্রতিদিন এখানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে আসেন। দূর-দূরান্তের পাইকাররা এখান থেকে কম মূল্যে সবজি কিনতে পারছেন।’ একই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, এ বাজারে প্রতিদিন কোটি টাকার সবজি বেচাকেনা হয়ে থাকে। বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হলে আরও বেশি ক্রেতাণ্ডবিক্রেতার সমাগম ঘটবে। পাশাপাশি উৎপাদিত সবজি সংরক্ষণ করতে সরকারি উদ্যোগে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতেন। আজহারুল ইসলাম তিনি একজন পাইকার জানালেন, তিনি লালমনিরহাট হাতিবান্ধা থেকে এসেছেন। এখানে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সবজি পাওয়া যায়। আমি এখান থেকে কম দামে সবজি কিনে হাতিবান্ধা এলাকায় সরবরাহ করে থাকি। বাজারের সবজির আড়তদার মো. নজরুল মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি সবজি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ১০ বছর নিজে চাষাবাদও করছি। এখন আড়ত চালাচ্ছি। প্রতিদিন এই বাজারে কোটি টাকার সবজি বেচাকেনা হয়। দিনদিন এ সবজির হাটের সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। রংপুর অঞ্চলে এখন এ হাট পাইকারদের কাছে অনেক জনপ্রিয়’। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন, এখানকার মাটি কৃষির জন্য খুবই উপযোগী। কৃষি বিভাগ থেকে সবসময় কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়। এখানকার সবজি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হয়ে থাকে। সবজি সংরক্ষণ ও বাজারজাত প্রক্রিয়া সহজতর করতে সরকারি উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে এখানকার কৃষি ও কৃষকর আরো উন্নয়ন হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত