ফখরুলের মন্তব্য
খালেদার রাজনীতি নিয়ে নাটক শুরু করেছে আ.লীগ
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না-করার বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ নাটক শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশ্য খারাপ। খালেদা জিয়া যেখানেই থাকুন, তিনি অবশ্যই রাজনীতি করবেন। কারণ, তিনি এ দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রী।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। গতকাল সোমবার তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গেছেন। তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা বিভিন্নভাবে নাটক শুরু করেছেন। তাদের কেউ বলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না। আবার কেউ বলেন, তার রাজনীতি করতে বাধা নেই। খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না-করা নিয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের বক্তব্য সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ বিষয়ে হঠাৎ করে আপনাদের এত দরদ উথলে উঠল কেন? উদ্দেশ্য একেবারেই ভালো না, খারাপ। তারা দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান। দেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চান। আমাদের সামনে দৃষ্টি একটাই-ভোটের অধিকার ফেরত চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে, তিনি রাজনীতি করবেন। তিনি যেখানেই থাকুক, রাজনীতি করবেন। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের কথা বলার দরকার নেই। খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত, তিনিই নেবেন, দল নেবে।
খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা ভোটে অনেকের সংসদ সদস্য হওয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিনা ভোটে ১৫৪ জনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো। জাতীয় পার্টি ডুগডুগি বাজিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগ দিল। অনেক বাম নেতা, যারা বড় বড় কথা বলেন, তারাও সেদিন নৌকার সঙ্গে নির্বাচনে জড়িয়েছিলেন, ভাগ নিয়েছেন। এখন তাদের আবার একটু অসুবিধা হচ্ছে। মন্ত্রিত্ব দেয়নি। যে কারণে তারা বলছেন, তাদের সঙ্গে কথা রাখা হয়নি।
এই বাম নেতারা আওয়ামী লীগের চেয়েও খারাপ। যাদের কাজ তাবেদারি করা, তোষামোদি করা, জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করা। আজকে গণতন্ত্র আছে কি নেই, সে কথা তারা বলেন না কেন?
আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্যে সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি আইসিইউতে যাবে না। আপনারা এরইমধ্যে আইসিইউতে চলে গেছে। দেউলিয়া হয়ে গেছেন রাজনৈতিকভাবে। তা না হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এতো ভয় কেনো? ভয় একটাই যে, আপনারা জানেন যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আপনাদের জামানত থাকবে না, ২০ আসনও পাবেন না।
তাঁতীদের নানা সমস্যা নিয়ে তাঁতীদলকে আন্দোলন করার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তাঁতী, কুমার, কৃষক, মজুরেরা খুব কষ্টে আছেন। চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।
তেল, লবণ, চিনি, ডাল- সবকিছুর দাম বাড়ছে। ডিম এখন ছোঁয়া যায় না। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে গেছে। বাড়িভাড়া বেড়ে গেছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো কঠিন হয়ে গেছে।
তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাজী মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য জিএম সিরাজ, উলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনিসহ তাঁতী দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।