চলতি বছরের সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক পূর্বের সিরিয়াল বহাল রেখে ৪৫, ৫১৪ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক পূর্বের সিরিয়াল বহাল রেখে ৮, ০০, ৪৬৭ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। কোটা পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন সার্ভার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি আরও একদফা নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল ওই সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে হজের খরচ বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এবার হজযাত্রীদের নিবন্ধনে সাড়া পড়ছে না। যে কারণে গতকাল পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থপনা মিলে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার বিপরীতে মাত্র ৩৩ হাজার ৬১৪ জনের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ হাজার ৪২০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৬ হাজার ১৯৪ জন।
সূত্রমতে, চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রাক-নিবন্ধিত ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৮২ জনের মধ্য থেকে কোটার সমসংখ্যক সিরিয়ালধারীদের এই নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হয়। তবে এই সিরিয়ালধারীদের মধ্য থেকে নিবন্ধনের সংখ্যা খুব কম হওয়ায় সিরিয়াল সংখ্যাও সময় আরও বাড়াল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সূত্রমতে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পাদিত হজ চুক্তি অনুযায়ী এ বছর মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বাংলাদেশি হজ পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৬৮ জন।
এর আগে করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকে পরপর দুই বছর হজে যাওয়ার সুযোগ পাননি কেউ। গতবছর মাত্র ৬০ হাজার ব্যক্তি (স্বাভাবিক কোটার অর্ধেকেরও কম) হজে গেলেও সৌদির শর্তের কারণে ৬৫ বছরের বেশি বয়সিরা বঞ্চিত হন। ফলে প্রাক-নিবন্ধন করেও দীর্ঘ দিন সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। এ বছর পূর্ণ কোটায় হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলেও খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আগ্রহী হজযাত্রীরা।
সূত্রমতে, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজে প্রত্যেক হজযাত্রীর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। গত বছর সরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ এবং প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা খরচ হয়েছিল।
এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোরবানি ছাড়াই সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর আগের বছর যা ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে। এবার বিমান ভাড়াই লাগছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা, যা গত বছর ছিল এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।
সূত্রমতে, করোনাকালের আগে ২০১৯ সালে হজের সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য ছিল তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ২০২০ সালে সর্বনিম্ন প্যাকেজ তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও সে বছর করোনার কারণে কারও হজে যাওয়ার সুযোগ হয়নি।