মোটরসাইকেল চলাচলের খসড়া নীতিমালা সংশোধন এবং পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতির দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন করেছেন কয়েকশ বাইকার। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বাইক বিডি, কেবি রাইডার্স, ন্যাশনাল বাইকার, বিডি বাইকারস এবং বিএমআরএস গ্রুপসহ কিছু সাধারণ বাইকারও অংশ নেন।
এতে বলা হয়, সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জেনেছি, মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালার একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, শহরে মোটরসাইকেল ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালানো যাবে না। মহাসড়কে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। মহাসড়কে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ১২৬ সিসি ক্ষমতা সম্পন্ন মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। মহাসড়কে চালক ব্যতীত কোনো আরোহী পরিবহণ করা যাবে না। ঈদ ও উৎসবের আগে-পরে ১০ দিন মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। এরকম আরও কিছু নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বেশ কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয় রয়েছে। এই নীতিমালা শহর এবং মহাসড়কে চলাচলের নিরাপত্তা বাড়াবে না, উল্টো ভোগান্তি বাড়াবে! শুধুমাত্র মোটরসাইকেলের ওপরে আইন প্রণয়ন করে যানজট ও দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়।
বাইকাররা বলেন, আবাসিক এরিয়াতে সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটার মানছি, কিন্তু সেটা শুধুমাত্র মোটরসাইকেল নয়, সব যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হোক। যেখানে আমাদের দেশে সব শহরে অপরিকল্পিত রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটোরিকশা, লেগুনা, সিএনজি মিশুক চলে ৪০-৫০ কিমি স্পিড নিয়ে। লোকাল ফুটপাতবিহীন এরিয়াতে হেঁটে চলাচল করা এখন ঝুঁকিপূর্ণ। এইগুলো নিয়ে আইন প্রণয়ন করুন। এতে করে জ্যাম এবং দুর্ঘটনাও কমবে।
তারা বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাতে মৃত্যু হার বাড়ছে, কিন্তু সেটা মোটরসাইকেলের জন্য? নাকি অন্যান্য যানবাহনের জন্য, সেটা আগে দেখুন। মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা সমাধান নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে এসে শুধুমাত্র সিসির ওপরে বিচার করে- এভাবে এই সিদ্ধান্ত বেমানান। কম সিসি’র বাইকগুলো হাইওয়েতে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু আজকের দুনিয়াতে এমন অনেক কম সিসি-সম্পন্ন মোটরসাইকেল রয়েছে, যেগুলো ১৫০ সিসি বাইকের মতো ভালো ব্রেক ও ব্যালেন্স রাখে। সুতরাং সরাসরি শুধুমাত্র সিসির ওপরে ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না।
মানববন্ধনে প্রতিকারের উপায় হিসেবে কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, আবাসিক এলাকায় কোনো যানবাহন ৩০ কিমির বেশি স্পিড নিয়ে চলতে না দেয়া। অপরিকল্পিত রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটোরিকশা, লেগুনা, সিএনজি, মিশুক বন্ধ করা অথবা এদের এরিয়া অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা। অটোরিকশা, লেগুনা, সিএনজি, মিশুকের জন্যও লাইসেন্স বাধতামূলক করা। খুব ব্যস্ত ও জরুরি রাস্তা হলে সেখানে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন করা। পাবলিক পরিবহণ যেমন, বাস ও সিএনজি’র যেখানে-সেখানে পার্কিং এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ করা। যে সড়কে সর্বোচ্চ গতি যতটুকু, ততটুকু প্রত্যেকটা যানবাহনের জন্যই প্রযোজ্য করা।