প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন- যুদ্ধ যত দ্রুত শেষ হবে ততই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
প্রধানমন্ত্রী গত শনিবার বিকালে কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সাথে বৈঠককালে শনিবার এই আহ্বান জানান। তিনি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে ওই দিন কাতারের রাজধানী দোহায় এসে পৌঁছান।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিকরা যাতে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।
ভাসানচরে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের বিষয়ে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবকে আরো রোহিঙ্গা সেখানে স্থানান্তর করতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই একমত হয়েছেন যে, সেখানে রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো পরিবর্তন আসুক বা না আসুক, রোহিঙ্গাদের শিগগিরই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। বৈঠকে, অ্যান্তোনিও গুতেরেস উন্নয়ন, কূটনীতি এবং কোভিড মহামারী মোকাবেলায় অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন যে ‘অর্জিত সাফল্যগুলো খুবই উৎসাহজনক’।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের জন্য তারা গর্বিত যিনি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা করেছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার বিকালে কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে ইউএনজিএ’র প্রেসিডেন্ট সাবা করোসির সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বৈঠকে সাউথ-সাউথ দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেন যাতে উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী সেভাবে সাহায্য না করায় জনগণের কল্যাণে সম্ভাবনা ও করণীয় খুঁজে পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে তিনি একদিনের জন্য এই বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে, ইউএনজিএ সভাপতি পরবর্তী সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে এই উদ্যোগ নেয়া উচিত বলে অভিমত দিয়ে বলেন, তারা আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক সমাবেশের কাজের জন্য নিযুক্ত থাকবেন।
বৈঠকে ইউএনজিএ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এটিকে ‘একটি অলৌকিক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন। দুই নেতা পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন। সূত্র : বাসস