ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট সেবার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে অনলাইন শিক্ষাক্রম। মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা না থাকার একাডেমিক-প্রশাসনিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস ও গবেষণাসহ যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সর্বস্তরে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসনিক ভবন, তথ্য প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিস, টিএসসিসি, ৬টি আবাসিক হলো, অনুষদ ভবনগুলো, বাদশাহ ফাহাদ বিন আব্দুল আজিজ কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও আবাসিক শিক্ষক কোয়ার্টারে ওয়াইফাই জোন চালু থাকলেও তা চলছে খুব স্থীর গতিতে। দুর্বল গতির এই ইন্টারনেটের কারণে ব্যবহার করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এতে বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছেন তারা এমন অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই সেবা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, অনলাইনে ক্লাস করা, বই পড়া ও গবেষণা কার্যক্রম চালাতে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রয়োজন, কিন্তু ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে সেসব শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। ইন্টারনেট কানেক্ট হলেও এর গতি ধীর হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী। বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ দীর্ঘসময় নিয়ে লোডিং হওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তারা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলগুলোতে সমৃদ্ধ ইন্টারনেট ব্যবস্থা থাকলেও দিনের বেশিরভাগ সময় ১০০ কেবিপিএস থেকে ১৫০ কেবিপিএস গতির ইন্টারনেট সংযোগের কারণে অনলাইনে শিক্ষামূলক কোনো কনটেন্টই দেখা সম্ভব হয় না। ফলে পড়ালেখা থেকে শুরু করে অ্যাসাইনমেন্টের কাজ করতে সমস্যায় পড়ছেন তারা। তাই বাধ্য হয়ে তাদের নিজ নিজ মোবাইল ডাটার উপর নির্ভর করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মামুন বলেন, ‘অবসরে অনলাইনে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কনটেন্ট ও বিদেশি লেখকদের বই পড়ার অভ্যাস থাকলেও হলের ইন্টারনেট সমস্যার কারণে বেশিরভাগ সময়েই পড়তে পারি না, ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে কোথাও ব্রাউজও করতে পারি না।’
শহিদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, ‘প্রতিদিন আমাকে আমাদের সেশনের গ্রুপে ক্লাসের সময়, টিউটরিয়াল পরীক্ষার সময়-তারিখসহ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখতে হয়। কিন্তু ওয়াইফাইয়ের ন্যূনতম স্পিড না থাকায় খুব সমস্যায় পড়ে যাই।’ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত সরকার রাসা বলেন, ‘একাডেমিক কিছু পড়াশুনা রয়েছে, যেটা নেট থেকেই আমাকে কাভার করতে হয়। কিন্তু ওয়াইফাইয়ের যে গতি তাতে পড়াশুনায় চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরেফিন বলেন, ‘ হলের প্রতিটি ব্লকে আমরা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাউটার ও ইন্টারনেটের সংযোগের ব্যবস্থা করলেও আইসিটি সেল থেকে আমরা নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সাপ্লাই পাচ্ছিনা। এটা সম্পূর্ণ আইসিটি সেলের ব্যর্থতা। তাদের ইন্টারনেট সাপ্লাইয়ের ব্যর্থতার দরুণ আমাদের শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কয়েকবার আইসিটি সেলে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান পায়নি।’ সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া বলেন, ‘ইন্টারনেটের ধীরগতির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি, ইন্টারনেট তো ভালোই চলছে। আর কোনো সমস্যার অভিযোগ পেলে ওয়াইফাই প্রোভাইডার বিটিজেনের সঙ্গে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করব।