সুসংবাদ প্রতিদিন
মাশরুম চাষে সফল জিনিয়া আক্তার
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
দীর্ঘদিন উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা থেকেই মাশরুম চাষ করে সফল বরগুনার নারী উদ্যোক্তা জিনিয়া আক্তার। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য আর পরিবারের সহযোগিতায় স্বাবলম্বী হয়েছেন এই উদ্যোক্তা। প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। সফল এই উদ্দ্যোক্তা এখন অনেক নারীরই অনুপ্রেরণা। বরগুনার সদর উপজেলার ক্রোক এলাকার বাসিন্দা জিনিয়া আক্তার। বাড়িতে নিজেদের থাকার ছোট টিনের ঘরের মধ্যে এক পাশে স্পন প্যাকেট তৈরি করেছেন। সেখানেই শুরু করেছেন বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ। ব্যবসার শুরুর মাত্র ৩ বছরে তার লাভ হয় তিন লাখ টাকা। এরপর তিনি ঘরের পাশে পতিত জমিতে আরো বড় আকারে শুরু করেন মাশরুম চাষ। সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন গণমাধ্যম দেখে মাশরুম চাষের প্রতি আগ্রহ জাগে জিনিয়া আক্তারের। পরে ঢাকার সাভারে মাশরুম ইনস্টিটিউট থেকে কয়েক দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এরপর বাসায় ফিরে নিজেই ছোট পরিসরে প্রজেক্ট শুরু করেন। অভাবের কারণে প্রথমে মাত্র ১০০টি স্পন কিনে এনে চাষ শুরু করেন এই উদ্দ্যোক্তা। এখন ৪০০ স্পন তৈরি করে তিনি বাণিজ্যিকভাবে করছেন মাশরুম চাষ। দেশের বিভিন্ন যায়গায় বিক্রি করছেন মাশরুম। এতে বেশ লাভবানও হচ্ছেন তিনি। মাশরুম চাষের লাভ দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে জিনিয়া ও তার পরিবারের ভরণপোষণ। আর তার এই সাফল্য দেখে জেলার অনেকেই শুরু করেছেন মাশরুম চাষ। সফল নারী উদ্যোক্তা জিনিয়া আক্তার বলেন, ইচ্ছা ছিল কিছু একটা করে স্বাবলম্বী হওয়ার। সবশেষ তিন বছর আগে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাজে নেমে গেলাম। মাশরুম লাভজনক চাষ। যত্ন নিলে সারা বছর কমবেশি ফলন পাওয়া যায়। তবে বীজের অভাবে অনেকেই মাশরুম চাষ করতে পারছে না। অধিকাংশ মানুষ বাইরে থেকে বীজ সংগ্রহ করে মাশরুম চাষ করছে। এখন আগ্রহীরা আমার কাছে বীজ পাবেন। পুরো মাসজুড়ে মাশরুম চাষে সময় দিচ্ছি। এতে যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে যাচ্ছে। আমার যেহেতু ছোট প্রোজেক্ট তাই গড়ে ত্রিশ হাজার টাকা লাভ হয়। আমার দেখাদেখি এখন অনেকেই মাশরুম চাষে আগ্রহী হচ্ছে। জিনিয়ার বাবা মো. শহিদুল ইসলাম রাসেদ বলেন, বিভিন্ন চায়নিজ রেস্তোরাঁর মালিক ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাদের থেকে মাশরুম কিনে নিয়ে যায়। অর্ডার করে দুই-তিন দিন পরে নিয়ে যায়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে মাশরুম সরবরাহ করি। এখন খামারের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। সামনে আরো বাড়ানোর ইচ্ছা আছে। সেটাও হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, সবজি হিসেবে মানুষের মধ্যে মাশরুম এখন বেশ জনপ্রিয়। বাজারে এটির চাহিদাও অনেক। অনেকের মতো জিনিয়াও কঠোর পরিশ্রমে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। সেখানে তার পরিবারও কাজ করছে। এটি অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হবে। জিনিয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে। নারী দিবসে তার জন্য শুভেচ্ছা রইল।