অন্যরকম

রহস্যজনক পাথরের সন্ধান!

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ভাইব্রেনিয়ামের বিষয়ে জানা আছে? কেউ যদি মার্ভেলসের কমিকস্ বা সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের ভক্ত হন, তা হলে নিশ্চয়ই জানা আছে। এই ধাতুর জোরেই মহাশক্তির অধিকারী ক্যাপ্টেন আমেরিকা, ব্ল্যাক প্যান্থাররা। ভাইব্রেনিয়াম হলো একটি কল্পধাতু। অর্থাৎ, মার্ভেলের স্রষ্টাদের কল্পনার বাইরে বাস্তবে এই ধাতুর কোনো অস্তিত্ব নেই। মার্ভেল স্রষ্টারা এই ধাতুকে বিশ্বের সব থেকে শক্তিশালী ধাতু হিসেবে দেখিয়েছেন। এই ধাতুর ‘ম্যাজিকে’ পৃথিবীর তথ্যপ্রযুক্তির দিশা বদলে যেতে পারে বলেও মার্ভেল স্রষ্টারা তাদের গল্পগুলোতে বর্ণনা করেছেন। বাস্তবে এই ধাতুর কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও সম্প্রতি নাকি এমন ধাতু পাওয়া গেছে আফ্রিকা মহাদেশের কঙ্গোতে! এ নিয়ে একাধিক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যদিও এসব ভিডিও স্বাধীনভাবে যাচাই করা হয়নি। গত ২১ জানুয়ারি ‘আফ্রিকা আর্কাইভস’ নামের এক টুইটার হ্যান্ডল থেকে ভিডিওগুলো শেয়ার করা হয়। যেখানে দেখা যাচ্ছে দুই ব্যক্তি দুটি পাথর হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। আর একটির সঙ্গে অন্যটি ছোঁয়াতেই তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ। যেমনটা মার্ভেলস্রে গল্পে ভাইব্রেনিয়ামের সম্পর্কে বলা হয়েছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ওই পাথর স্পর্শ করিয়ে একটি ছোট বাল্বব জ্বালিয়ে দেয়া যাচ্ছে কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়াই। সেখানে দাবি করা হয়েছে, এই পাথরের একটি এক গ্রামের টুকরো নাকি, টানা ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে একটি বাল্ব জ্বালিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এই ‘রহস্য’ পাথরের এক কেজি অন্তত দুই মাস দুই কামরার বাড়িতে একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। এই আবহেই প্রশ্ন উঠছে তা হলে কি অবশেষে সত্যিই মানুষের হাতে উঠে এলো অফুরান শক্তির উৎস? ভাইব্রেনিয়ামের অস্তিত্ব কি তা হলে সত্যিই আছে। তবে এ বিষয়ে অন্য কথা বলছে কঙ্গোর বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যম ‘নাইরোবি নিউজ’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই তড়িদাহিত শিলাগুলো ম্যাগনেটাইট এবং কোয়ার্ৎজ শিলার মিশ্রণ থেকে তৈরি করা হয়েছে। আর এই দুই খনিজের শঙ্কর ধাতুই বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গের উৎপত্তি হওয়ার কারণ। পাথরের টুকরার ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার পর গবেষকরা গবেষণার কাজ শুরু করেছেন। ‘নাইরোবি নিউজ’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, এই ধাতুর আসল নাম ভাইব্রানিয়াম নয়। তবে এর অস্তিত্ব রয়েছে এবং এটি কঙ্গোর কাতাঙ্গা অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই পাথরের উপর একাধিক গবেষণা আগেও করা হয়েছে। এই পাথরের শক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা রয়েছে বলেও বিভিন্ন জায়গায় দাবি করা হয়েছে। অনেকের দাবি, নির্দিষ্ট মাত্রার শব্দের কারণে এই পাথরের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক স্রোত প্রবাহিত হতে পারে। এই সম্ভাব্য আবিষ্কারের পরে, কঙ্গোর বাসিন্দারা আশাবাদী যে, এই পাথরগুলো একটি নতুন শক্তির উৎস হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি এই পাথর জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে বিশ্বের নির্ভরশীলতাও কমাতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।

কঙ্গো খনিজ সম্পদের জন্য বিখ্যাত। কঙ্গোতে কোল্টান, কোবাল্ট, তামা, সোনা, টিনসহ একাধিক ধাতুর খনি রয়েছে। যদিও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী এই পাথরের উৎস অজানা বলেই ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কোল্টান এবং কোবাল্ট- এই দুই ধাতুই বৈদ্যুতিক যন্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের ক্যাপাসিটর এবং ট্রানজিস্টর তৈরিতে কোল্টানের ব্যবহার হয়। কোবাল্ট ব্যবহার করা হয় ব্যাটারি, চুম্বক এবং উচ্চশক্তির সংকর ধাতু তৈরিতে। বেশ কিছু বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট এবং পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পৃথিবীতে ভাইব্রেনিয়ামের কোনো অস্তিত্ব নেই। কোথাও কোথাও দাবি করা হয়েছে, এই ধাতু কোনো দিন আবিষ্কারও হওয়া সম্ভব নয়। সূত্র : ইন্টারনেট।