রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দীর্ঘ ৩০ বছর পর ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সাঁওতাল সম্প্রদায় ফিরে পেয়েছে তাদের পূর্বপুরুষদের কবরস্থান।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান এই কবরস্থান উদ্ধার করে গতকাল মালিকদের বুঝিয়ে দেন।
উদ্ধার হওয়া জমিটি ওই এলাকার সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন ৩০ বছর যাবত কবরস্থান হিসাবে ব্যবহার করে আসছিল এবং রেকডীয় খতিয়ানে কবরস্থান উল্লেখ রয়েছে।
এই কবরস্থানটি কাদমা ফুলবাড়ী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তাহাসিন উদ্দীন ও তার ভাই আব্দুল গণি ৮৭ শতক জমির মধ্যে ১২ শতক জমি কবরস্থান রেখে বাকি ৭৫ শতক জমি দখল করে চাষাবাদ করে আসছিল। তাদের বারবার কবরস্থানের জমি ছেড়ে দেবার জন্য বলা হলেও তারা সেই জমি জবর দখল করে চাষাবাদ করে আসছিল।
গত ৯ মার্চ রক্ষাগোলা সংগঠনের মোড়ল লুইস কিস্কুর নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা গোদাগাড়ী ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। এসি ল্যান্ড তাদেরকে আশ্বস্ত করেন বিষয়টি ডিসিকে জানিয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এসিল্যান্ড সবুজ হাসান বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করে নিজেই তাৎক্ষণিক কবরস্থানটির তদন্ত করে দখলের সত্যতা পান।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারসহ এসিল্যান্ড নিজে উপস্থিত থেকে গ্রামবাসী ও দখলদারদের উপস্থিতিতে কবরস্থানের ৮৭ শতক জমি মেপে সিমানা নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন সিসিবিভিওর শাখা কার্যালয়ের ইনচার্জ ও ঊর্ধ্বতন মাঠকর্মকর্তা নিরাবুল ইসলাম, সমাজ সংগঠক ভূমি নিরঞ্জন কুজুর, সমাজ সংগঠক প্রেমচাদ এক্কা, স্থানীয় সার্ভেয়ার আলমগীর হোসেন, গোদাগাড়ী উপজেলা ভূমি অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ গ্রামের জনগণ।
কবরস্থানটি উদ্ধার হওয়ায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন জেলা প্রশাসক ও গোদাগাড়ীর এসিল্যান্ড সবুজ হাসানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ভূমিদস্যুদের হাতে থাকা কবরস্থানটি পেয়ে খুশি হয়েছি। ভবিষ্যতে এমন কাজে পাশে থাকার আশা প্রকাশ করেন তারা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান জানান, কবরস্থানটির ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর নিজে সময় নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। দখলকারিরা ১৯৯২ সালের দিকের কিছু কাগজপত্র দেখায়। সেই কাগজপত্রাদি আমার কাছে সঠিক না মনে হওয়াতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় কবরস্থানটি তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন ধরনের জবর দখলের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আইন অনুযায়ী সম্পত্তির প্রকৃত ব্যক্তিদের বুঝিয়ে দিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।