বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে গতকাল জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন সাময়িক বিরতির পর আবার নতুন আঙ্গিকে, নতুন সম্ভাবনায়, নতুন উদ্দীপনায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে নবউদ্যমে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের পথপরিক্রমার সূচনা হলো।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দীক্ষা’।
শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর দেশব্যাপী ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা, শিক্ষা মেলাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ঢাকার জাতীয় অনুষ্ঠানে ২০১৯ ও ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে ২০১৯ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ২১ জন এবং ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৯০ শিশুসহ ১১১ জন এবং ২০২২ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ২১ জন এবং ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৮৪ শিশুসহ ১০৫ জন রয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালে ২১ ক্যাটাগরিতে ৪২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সনদ দেয়া হয়। পদকপ্রাপ্তরা ২০১৩ এর পদক নীতিমালা অনুযায়ী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী শিশুরা যথাক্রমে ২০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার টাকা ও ১০ হাজার টাকাসহ একটি সার্টিফিকেট ও একটি ক্রেস্ট পায়। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা ২৫ হাজার টাকা, একটি সার্টিফিকেট ও একটি ক্রেস্ট পান। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার পুরোনো ধারার শিক্ষার খোলনলচে পাল্টে এমন এক শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে- যা শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক ও পিঠ থেকে মুখস্থবিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফলে তাদের কৌতুহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে ও নেতৃত্বের গুণাবলী তৈরিতে উপযোগী করে তুলবে।
সভাপতির বক্তৃতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, সরকার সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষক নিয়োগ, অনলাইনে বদলি, শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে ২ বছরে উন্নীতকরণ, নতুন পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, প্রাথমিকবৃত্তি প্রদানসহ প্রাথমিক শিক্ষার গুনগতমান বৃদ্ধিকল্পে একগুচ্ছ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আগামী দিনের সুনাগরিক গড়ে তুলতে শিশুদের শিক্ষার জন্য সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।