ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

হবিগঞ্জের কৃষক বদু মিয়ার জিঙ্ক আলুতে নতুন সম্ভাবনা

হবিগঞ্জের কৃষক বদু মিয়ার জিঙ্ক আলুতে নতুন সম্ভাবনা

নিত্যনতুন ফসল আবাদ এবং রাসায়নিক সার ও বিষ প্রয়োগ না করে আলোচিত জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক বদু মিয়ার জমিতে এবার ভালো ফলন হয়েছে জিংক আলু। আবার রমজানকে সামনে রেখে বিস্তীর্ণ জমিতে আবাদ করেছেন হরেক রকম ফসল। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার অজপাড়াগাঁ গোপিনাথপুর এখন সবুজের সমারোহ। বিদেশি ও ব্যতিক্রম ফসল আবাদ করে তাক লাগানো বদু মিয়া এ বছর বাজিমাত করেছেন জিংক আলু বা কাল রঙের আলু আবাদ করে। বদু মিয়া জানান, দুই বছর আগে বিএডিসিরি কর্মকর্তা রেজাউল করিমের কাছ থেকে তিনি জিংক আলুর বীজ সংগ্রহ করেন। হল্যান্ডে এ আলুর আবাদ করা হয়। অত্যন্ত পুষ্টিকর এ আলু বাংলাদেশে তিনিই প্রথম আবাদ করেছেন। বীজের অভাবে এবছর মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন এ আলু। ফলন হয়েছে ৪০ মণ। ঘরে আনার আগেই শেষ হয়েছে বিক্রি। কৃষক বদু মিয়া জানান, জিংক আলু উৎপাদন করার পর ৬০ টাকা কেজি দরে আগাম বিক্রি হয়ে যায় সব আলু। নাফকো কোম্পানি ১০ মণ, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ও মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ৩ মণ করে এ আলু ক্রয় করেন। এ উৎপাদিত আলু দেখতে ও কিনতে অনেকেই তার বাড়ি ও খামারে ভিড় জমান। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এ আলু আবাদ করার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি। জিংক আলু নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল কুণ্ড জানান, বারিতে এ জাত আছে। এটি জিংক এবং আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এটি শিক্ষিত সমাজে সমাদৃত হলেও সাধারণ মানুষ এখনও এটি পছন্দ করে না। কারণ এর রং কাল এবং রান্না করলে গলে যায়। তবে বিদেশিরা এটিকে হাল্কা সিদ্ধ করে সালাদ করে খায়। আমাদের দেশেও এক সময় এটি জনপ্রিয় হবে। কৃষক বদু মিয়া এ আলু আবাদ করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এদিকে বদু মিয়া রমজানকে সামনে রেখে তার জমিতে লাগিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের ফসল। এর মাঝে ইন্ডিয়ান গ্রিন ব্ল্যাক ক্যাপসিকামে ভরে গেছে মাঠ। রমজানের কয়েক দিন আগে থেকেই এ ফসল বাজারে নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বদু মিয়া। বাহুবলি ও বিউটিফুল টমেটোও পাকতে শুরু করেছে। সাম্মাম গাছে ফল ধরেছে। পুরো রমজান মাসেই বিক্রি হবে বেগুন। শসার ফলনও পুরো রমজান চলবে।

আবার ঈদকে সামনে রেখে আলাদ করে আবাদ করা হয়েছে শসা। এ ব্যাপারে কৃষক বদু মিয়া জানান, গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ফসল আসা এবং পরিপক্ব হওয়ার জন্য যে সময় প্রয়োজন, সেই সময়কে হিসাব করে রমজান মাসকে টার্গেট করে ওই সময়ে যে ফসলের চাহিদা বেশি থাকে সেই ফসল বেশি করে আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া যাতে ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য সেচ ও গ্রিন হাউসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ফসল থেকে ভালো লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিরি আরও জানান, এ বছর জিংক আলু, ডায়মন্ড আলু, দেশি আলু, মিষ্টি আলু, পার্পাল ভুট্টা টমেটো সজ বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলিয়ে লাভবান হয়েছেন। বিষমুক্ত হওয়ায় লোকজন তার বাড়িতে এসেই তা কিনে নেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত