ঢাকা ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
আজ ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস

আজ ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে ভোক্তা সাধারণকে জানান আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘ভোক্তা-অধিকার’ সর্বজনীন একটি অধিকার। সরকার ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘ ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য জনগণ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। রাষ্ট্রপতি দেশের আপামর জনসাধারণের অধিকার রক্ষায় বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ জ্বালানি, ভোক্তাবান্ধব পৃথিবী’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারের গৃহীত উদার বাণিজ্যনীতি ও বহুমুখী নীতি সহায়তা প্রদানের ফলে দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা খাতে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ এখন শিল্প উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও আমদানিকারকদের নিকট আকর্ষণীয় গন্তব্য। সরকারের উন্নয়ন দর্শনের আওতায় ধারাবাহিক নীতি ও কৌশল যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে এরই মধ্যে ঈর্ষণীয় উন্নতি করেছে। ফলে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উত্তরণে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান করেছে। তিনি জানান, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সূচকের ঊর্ধ্বগতি নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন, নিরাপদ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির জোগান একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। তাই, জাতীয় সমৃদ্ধি, ভোক্তা অধিকার রক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির প্রত্যাশা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভেজাল ও মজুতদারি প্রতিরোধ, বাজারব্যবস্থার সার্বিক তদারকির পাশাপাশি ভোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপদ জ্বালানির বিপণন ও বাজার ব্যবস্থাপনায়ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তিনি ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ১৫ মার্চ ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে তিনি দেশবাসীসহ বিশ্বের সব ভোক্তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য- ‘নিরাপদ জ্বালানি, ভোক্তাবান্ধব পৃথিবী’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রণয়ন ও আইনের সফল বাস্তবায়নের জন্য ২০১০ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করে। অধিদপ্তরটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধ এবং ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ নকল ও ভেজাল রোধে অধিদপ্তর নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী নিজের অধিকার সম্পর্কে প্রত্যেককেই সচেতন হওয়ার পাশাপাশি দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য সব ব্যবসায়ী ও ভোক্তার প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সুফল প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিষ্ঠার সাথে যথাযথ ভূমিকা রাখবে। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।

জাতির পিতার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিশ্ব দরবারে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি লাভ আওয়ামী লীগ সরকারের যুগান্তকারী অর্জন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়োপযোগী উদার বাণিজ্যনীতি এবং সমন্বিত নীতি কৌশল যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ এখন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, মেট্রোরেলসহ মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে উলে¬খযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশের কাতারে উন্নীত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়ে তিনি ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত