পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, হাওরের ফসল রক্ষায় তড়িঘড়ি করে টেকসই প্রকল্প নেয়া সম্ভব নয়। কারণ, এর স্বতন্ত্রতা ও জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার আগে বিশেষজ্ঞ সমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব না। আগে বাঁধে কাজের জন্য উপযোগী হতে হবে। অধিকাংশ হাওরে পানি নামতে অনেক দেরি করে।
গতকাল প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বরাম হাওরের তুফানখালী ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাওরের স্থায়ী বাঁধ বা নদী খননের প্রকল্প খুব ব্যয় বহুল প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। বিগত ৩ বছর ধরে বৈশ্বিক মন্দা চলছে। বাংলাদেশ মন্দার বাইরে নয়। মন্দার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছেন। হাওরের কাজ থেমে নেই চলতেছে। এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আগামীতে হাওরের উন্নয়নের জন্য ভালো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। শিগগিরই হাওর এলাকার ১৯টি নদী খননের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। সেজন্য কাজ চলছে। এছাড়া ৬০০ কোটি টাকার আরো একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বাঁধ নিয়ে এত কথা হবে না। তিনি আরো বলেন, হাওরের বাঁধ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে করা সম্ভব নয়। কারণ, প্রাকৃতিক কারণে এটা সম্ভব হয় না। পানি নামার পর জায়গাটা কাজের উপযোগী হলেই তবে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়। কাজেই সময়সীমার মধ্যে করতে পারা না পারার বিষয়টা ঠিক না। আমরা বাঁধের কাজ আন্তরিকভাবে করে যাচ্ছি, যাতে কৃষক তার ফসল নিরাপদে ঘরে তুলতে পারে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মল্লিক সাঈদ মাহবুব, জেলা প্রশাসক দিদারের আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, সামসুদ্দোহা প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী দিরাই ও শাল্লা উপজেলার টাংনির হাওর, জলডোবা, জয়পুর উদগলবিল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধও পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, চলতি বছর ২০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩টি হাওরে ৭৪৫ কিলোমিটার ডুবন্ত ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাঁধ তৈরির জন্য আজ পর্যন্ত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১০০ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে। এই বছর ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন জেলার ৪ লক্ষাধিক কৃষক।