বিজিবিতে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তরসহ সারা দেশে বিজিবি সব ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) তৃতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ও ‘অসমাপ্ত মহাকাব্য’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিশেষ আলোচনা করা হয়।
বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানার সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ৭৫-এর ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী সব সদস্যের, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদ এবং বিজিবির দুইজন বীরশ্রেষ্ঠসহ আত্মোৎসর্গকারী ৮১৭ জন বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজ বাঙালি জাতির জন্য একটি বিশেষ দিন। ১৯২০ সালের এই দিনে জাতির পিতার জন্ম না হলে হয়তো এখনো আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের সেই পরাধীনতার শিকলে বন্দি থেকে যেতাম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও মহানুভবতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলীর পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় থেকেই তার নেতৃত্বের গুণাবলী প্রস্ফুটিত হতে থাকে এবং একজন আপোসহীন ও অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলনে জেলখানায় থেকেও তিনি নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ও জগদ্বিখ্যাত ভাষণ এখন পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে পরিগণিত, যার মাধ্যমে স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছিল।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী এই বাহিনীর করণীয় ও দায়িত্ব সম্পর্কে যে সুচিন্তিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেটি হৃদয়ে ধারণ করে বিজিবির ওপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব বিশেষত আন্তর্জাতিক সীমানা রক্ষা করা, চোরাচালান বন্ধ করা, মাদক পাচার রোধসহ অন্যান্য দায়িত্ব দক্ষতা, সততা, ন্যায়, নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে বিজিবির ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গতকাল বাদ জুমা পিলখানা কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া, সদর দপ্তর বিজিবি, পিলখানার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে সীমিত আকারে আলোকসজ্জা এবং সারা দেশে বিজিবির সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে ব্যানার, ফেস্টুন এবং পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে রাতে পিলখানাসহ সারা দেশে বিজিবির সব ইউনিটে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজিবির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির সৈনিক, সব অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।