কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) স্নাতক ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছে যাবে নাকি যাবে না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকবে কি, থাকবে না এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় যদি নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তিতে অংশগ্রহণ করে, তাহলে তার নীতিমালা কি হবে, সেটাও ঠিক করা হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ উপাচার্য, সব বিভাগের ডিন, সভাপতি এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.জাহাঙ্গীর হোসেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গুচ্ছের কারণে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে প্রায় ছয় মাসের সেশন জটে পড়তে হয়েছে। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যারা গুচ্ছের বাইরে তাদের একই সেশনের শিক্ষার্থীদের একটা সেমিস্টার শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়েছে গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতির কারণে। একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হবে এটা কখনো চাই না। এখন পর্যন্ত আামাদের সিদ্ধান্তে আমরা অটল রয়েছি। তিনি আরো বলেন, উপাচার্যও শিক্ষকদের পক্ষে আছেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ইবি শিক্ষকরা তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেছেন, সমিতির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২১ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে ইবি। পরবর্তীতে দেখা যায় সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার সমন্বয়হীনতা, দীর্ঘসূত্রিতা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। ফলে ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা করে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তির পক্ষে মতামত প্রদান করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে ইবি প্রশাসনের সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতাগুলো নিরসনের আশ্বাসে ইবি শিক্ষক সমিতি শর্ত সাপেক্ষে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টা মেনে নেন। কিন্তু ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতা, ভোগান্তি ও দীর্ঘসূত্রিতা আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, শিক্ষকরাই তো ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। তাদের উপেক্ষা করে আমার একার সিদ্ধান্তে তো কোনো কাজ হবে না। তাদের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। এদিকে, প্রায় অর্ধশতাধিক আসন খালি রেখে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তির নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয় মোট ১৩টি মেরিট লিস্ট প্রকাশ করেও পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী পায়নি।