ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় স্বস্তি ছিল যাতায়াতে

তিন দিনের টানা ছুটি

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন দিনের ছুটি শেষে আবার জমে উঠবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কর্মস্থল ও বিপণি বিতান। বাড়বে রাস্তা-ঘাটে মানুষের কোলাহল। পবিত্র রমজান মাসে ইফতারির আগে রাজধানীতে যে ভীড় লক্ষ্য করা যায় গত তিন দিনে তেমনটি ছিল না। গত শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে গতকাল স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি মিলে একটানা তিন দিনের ছুটি ছিল অনেকটা ঈদের ছুটির মতো। যারা রাজধানী ছেড়ে অন্য কোথাও যাননি তারা কোলাহলমুক্ত পরিবেশে চলাফেরা করে অনেকটা স্বস্থি বোধ করেছেন। এর আগে কয়েক দিনে যানজটে মানুষের ভোগান্তি কম ছিল না।

গতকাল সরকারি ছুটি থাকায় ঢাকার রাস্তা ছিল ফাঁকা। এছাড়া ঈদের কেনাকাটা এখনো শুরু না হওয়ায় বিপণি বিতান ও শপিং মলগুলোতে অলস সময় কাটান দোকানিরা।

রমজান মাসে টানা তিন দিনের ছুটিতে ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল ছিল কম। ছিল না যানবাহনের বাড়তি চাপ। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছিল প্রায় ফাঁকা। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পড়তে হয়নি যানজটে। এমনকি যানজটপ্রবণ অঞ্চলগুলোতেও যানবাহনের জটলা ছিল কম।

ঢাকার রাস্তা এমন ফাঁকা থাকায় ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ ছিল খানিকটা উল্লসিত। কোনো ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই রাস্তায় যাতায়াত করতে পেরেছে তারা। গণপরিবহনে উঠতে কোনো ধরনের বেগ পেতে হয়নি। সহজেই পাওয়া যায় বসার আসন। আবার যাত্রীর সংখ্যা কম হলেও যানবাহনের কর্মীরাও খুব একটা বিরক্ত বোধ না করলেও জমা দেয়ার চিন্তা ছিল। তারপরও যানজটমুক্ত রাস্তায় গাড়ি চালাতে পেরে তারাও ছিল খুশি।

রাজধানীর যে কয়টি সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম কাকরাইল মোড়। অথচ সেখানে বেলা ১১টার দিকে যানবাহনের কোনো চাপ ছিল না। ট্র্যাফিকের দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যরাও প্রায় অলস সময় পার করেন ।

পরিবহনের চালকরা জানান, টানা তিন দিনের ছুটি পাওয়ায় অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন। এ কারণে ঢাকার রাস্তা প্রায় ফাঁকা। যাত্রী কম থাকায় রাস্তায় গাড়িও কম নেমেছে। তারপরও খুব বেশি যাত্রী পাওয়া যায়নি।

যাত্রী কম হলেও বাস কর্মীরা খুশি এমনটি জানিয়ে বলেন, ঢাকার রাস্তায় এমন যানজটমুক্ত গাড়ি চালানোর সুযোগ খুব একটা পাওয়া যায় না। কখনো কখনো ২০/২৫ মিনিটের পথ চলতে দেড় ঘণ্টা লেগে যায়।

ট্র্যাফিকের দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যরা জানান, কর্মদিবসে রাস্তায় পরিবহনের চাপ খুব বেশি থাকে। আমরা যারা এখানে ট্র্যাফিকের দায়িত্ব পালন করি, যানবাহনের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ থাকে। অথচ আজ (গতকাল) সেই চাপ নেই। সব দিক থেকেই খুব কম পরিমাণ বাস, রিকশা, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল যাতায়াত করছে। ফলে আমরা অনেকটাই রিল্যাক্স মুডে দায়িত্ব পালন করতে পারছি।

রাস্তা ফাঁকা থাকবে ধারণা নিয়ে অনেকে ঘর থেকে বের হলেও রাস্তায় এসে দেখেন রাস্তা ফাঁকা। তবে এত ফাঁকা থাকবে তা বুঝতে পারেনি। কোথাও কোনো ট্র্যাফিক সিগন্যাল ছিল না। ঢাকার রাস্তায় গতকাল মোটরসাইকেল চালানো ছিল স্বস্থির ব্যাপার। মোটর সাইকেল চালকরা বলেন প্রতিদিন যদি এমন ফাঁকা থাকত তাহলে কতই না মজা হতো।

বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে অফিসগুলোতে গতকালও তালা ঝুলতে থাকে। রাস্তায় মানুষের তেমন আনাগোনা ছিল না। বেশ শান্ত ও নীরব পরিবেশ। মতিঝিলের ফুটপাতেও ছিল না তেমন একটা দোকানপাট। অফিস বন্ধ থাকায় মানুষের আনাগোনা ছিল না। ছিল না তেমন বেচাবিক্রিও।