দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান

পাঁচ বছরে জরিমানা আদায় ৬ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এএইচএম ফারুক

গত পাঁচ বছরে দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতিবিষয়ক বিভিন্ন মামলায় ৬ হাজার ৪১৭ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭৯৩ টাকা জরিমানা ও ৪৭৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭২১ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই বিপুল অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে কোষাগারে জমা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় আদালতের নির্দেশনায় জরিমানা ও বাজেয়াপ্তের মাধ্যমে ওই অর্থ এসেছে। দুদকের প্রকাশিত সবশেষ বার্ষিক বিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুদক সূত্রে আরো জানা গেছে, দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় আসামিদের কাছ থেকে ২০২২ সালে ২ হাজার ৬৩২ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা ওই বিপুল অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়েছে আদালতের নির্দেশে।

আর আগে ২০২১ সালে ৭৫ কোটি ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ টাকা, ২০২০ সালে ৭২ কোটি ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৩০ টাকা, ২০১৯ সালে ৩ হাজার ৪৯৭ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৯ এবং ২০১৮ সালে ১৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৯৯১ টাকা জরিমানা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

তথ্যানুসারে, দুর্নীতিবাজদের মোট ৪৭৭ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭২১ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০১৮ সালে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৫২ টাকা, ২০১৯ সালে ৪৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩৭৪ টাকা, ২০২০ সালে ৩ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার, ২০২১ সালে ১০ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৮ এবং ২০২২ সালে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৬৭ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, গত ৫ বছরে জরিমানা করেছি ৬ হাজার ৪১৭ কোটি ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকার বেশি। আমি মনে করি জরিমানা ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত না করে অন্যায়কারীদের জেল দিলে ভালো মানুষের ট্যাক্সের টাকায় তাদের খাওয়াতে হয়। আর জরিমানা আদায় করলে দুর্নীতিবাজরা একটি শিক্ষা পায় যে, আমরা যত টাকাই আয় করি না কেন, রাষ্ট্র সব টাকা নিয়ে নেবে। ফলে অবৈধভাবে আয় করার মানসিকতা কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা চাই অন্যায় করলে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক। আমরা যথাযথভাবেই আদালতকে বলতেছি, ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত আমাদের সাহায্য করছে। আমাদের কর্মকর্তা ও আদালতের সাহায্যে কাজগুলো এগিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছি।

এছাড়া ২০২২ সালের পুরো বছরে দুর্নীতিবাজদের মোট ৫৮৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১৫৬ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। যার মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ১৪৪.২৪৪৫৬ একর জমি, ২৭টি বাড়ি, ১৯টি ফ্ল্যাট, ১১টি গাড়ি ও ৪টি নৌ-যান রয়েছে।

অন্যদিকে অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ হওয়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৪৪৮টি ব্যাংক হিসাব ও ১১টি এফডিআরে ১৪৪ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার ৭০৬ টাকা, ২৭ হাজার ৯৫৪ মার্কিন ডলার ও ৭৯ কোটি ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬০ টাকার শেয়ার। মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ হলো ২২৪ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৬ টাকা। আদালতের ভিন্ন কোনো নির্দেশনা না থাকলে দুদক সংশ্লিষ্ট ওইসব সম্পদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে দুদকের ব্যবস্থাপনা ইউনিট। ২০১৯ সাল থেকে কমিশনের স্বতন্ত্র ইউনিট হিসেবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট যাত্রা শুরু করে।