ঢাকা ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

সোনাগাজীতে তরমুজে কৃষকের মুখে হাসি

সোনাগাজীতে তরমুজে কৃষকের মুখে হাসি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সম্ভাবনার ফসল তরমুজ। এ উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে নানা জাতের বিভিন্ন স্বাদের রসালো তরমুজ। হেক্টরের পর হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে তরমুজের। ফলনও এসেছে বাম্পার। এরই মধ্যে সেসব ফসল মাঠ থেকে তরমুজ আহরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলে বিনিয়োগের দ্বিগুণের বেশি লাভের আশা করছেন কৃষক ও উদ্যোক্তারা। তবে আশঙ্কার বিষয় শিলাবৃষ্টি। বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়লে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়েছেন তরমুজচাষিরা। সোনাগাজীতে চতুর্থ বারের মতো আবাদ হয়েছে তরমুজের, এখানকার তরমুজ বেশ সুস্বাদু হওয়ায় এবং গত তিন বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের মাঝে। বাজারেও তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাহিদা। সোনাগাজী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবছর সোনাগাজীর উপকূলীয় ৫টি ইউনিয়ন চরচান্দিয়া, চরদরবেশ, নবাবপুর, আমিরাবাদ ও সোনাগাজীতে ব্লাকবেরি, গ্লোরি, বাংলালিংক, ওশান সুপার ও ভিক্টর সুপার জাতের তরমুজের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ৩৪৫ হেক্টর জমি ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৫৭৫ হেক্টরে। একাধিক কৃষক জানান, হেক্টরপ্রতি আনুমানিক খরচ হয়েছে ৩ লাখ টাকা। হেক্টরপ্রতি তরমুজ বিক্রি হবে প্রায় ১০ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে এবার প্রায় ৫৭ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হতে পারে বলে আশা করছে কৃষক। সোনাপুর এলাকার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আইয়ুব, ইফতেখার ও আনোয়ার জানায়, তাদের ১৫ জনের একটি দল গত বছর তরমুজের আবাদ করে প্রায় কোটি টাকা লাভবান হয়েছেন। এ বছর তারা পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে প্রায় ২১৬ একর জমিতে দেড় কোটি টাকা খরচ করে তরমুজের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো আসছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবারও কোটি টাকার বেশি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী তারা। জসিম উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, গত বছর তার পাশের জমিগুলোতে তরমুজের ভালো ফলন দেখে এ বছর তিনিও ২ একর জমিতে ২ লাখ টাকা ব্যয়ে আবাদ করেছেন। ফলন দেখে তিনি খুশি। আশা করছেন ৭/৮ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। এ অঞ্চলের মানুষ জমির মালিক হলেও এখানে তরমুজ চাষাবাদের জন্য দক্ষ নোয়াখালীর সুবর্ণ চরের মানুষ। সেখান থেকে কৃষকরা এসে এখানকার জমিগুলোতো আবাদ করেন। এতে তারাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। মো. ইমরান নামের এক তরমুজচাষি জানান, তিনি সুবর্ণ চর থেকে ফেনীতে এসে তরমুজ আবাদ করছেন। প্রতিমাসে তিনি বেতন হিসেবে পাচ্ছেন ১৮ হাজার টাকা। এভাবে আরও শত শত শ্রমিক সুবর্ণ চর থেকে এসে তরমুজের আবাদ করছে। সোনাগাজী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার জানান, কৃষকদের তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে কৃষি অফিস কাজ করছে। এখানকার জমিগুলো তরমুজ উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী। তরমুজের আকার বড় হয় ও স্বাদ অতুলনীয় যে কারণে বাজারে ব্যাপক চাহিদা আছে। আশাকরি এ বছর কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত