দেশের ১২টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় মোট ৫১টি সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গতকাল তিনি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়াসহ জুম অনলাইনে ৫১ জেলা ও উপজেলা সরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি চিকিৎসকরা এ যাবত সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের বিকালে চিকিৎসাসেবা নিতে প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিকে যেতে হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী অনুধাবন করতে পেরে সেভাবে নির্দেশনা দেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনানুযায়ী উদ্যোগী হয়েছি। আমরা মনে করেছি, এই ব্যবস্থা চালু হলে দেশের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। সেজন্য আপাতত পাইলটিং আকারে দেশের ১২ জেলা ও ৩৯ উপজেলার মোট ৫১টি সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু করা হলো। এ কার্যক্রম মানুষের ভালো লাগলে এ বছরেই দেশের সব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় অনলাইন জুম অ্যাপে যুক্ত থাকা ৫১ জেলা উপজেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং ওই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে অনুভূতি জানতে চান। যুক্ত সবাই এ কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
যেসব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে- ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল, ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
এছাড়া, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে।
চট্টগ্রামের আট বিভাগে প্রথম ধাপে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এগুলো হলো- ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এবং পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার মধ্যে রয়েছে- জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
খুলনা বিভাগের চার জেলায় এই বৈকালিক সেবা চালু হয়েছে। এগুলো হলো- ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রাজশাহী বিভাগের তিন জেলায় বৈকালিক সেবা চালু হয়েছে। এগুলো হলো- নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল এবং সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় এই সেবা চালু হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ এবং গংগাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
বরিশাল বিভাগের তিন জেলায় এই সেবা চালু হয়েছে।
এগুলো হলো- ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল এবং চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
সিলেট বিভাগের চার জেলা হলো- সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোপালগঞ্জ এবং বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইত্যাদি।
