পদ্মা সেতুতে পাথরহীন ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। গত বুধবার রাতে পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (অফিস ম্যানেজার) মো. সাদমান শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে পদ্মা সেতুর মধ্যভাগ প্রান্তে কাজ শুরু হয়ে বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে শেষ হয়। রেললাইনের ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাই করার মধ্যদিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে অসম্পূর্ণ (বাকি) থাকা ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ বিকালে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা সেতুর ওপরের রেললাইনের কাজ শেষ করেছি। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ১৬৯ কিলোমিটার রেল লাইনের মধ্যে পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুতে রেলপথের একটি সিøপার বসানো বাকি ছিল। ওই সিøপারটি মঙ্গলবার চায়না থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর সন্ধ্যায় তা প্রকল্প এলাকায় আনা হলে, রাতেই ওই সিøপারটি সেতুর রেলপথে বসানো হয়। সেতুতে তা বসানোর পর অসম্পূর্ণ থাকা বাকি ৭ মিটার কংক্রিটের ঢালাই শেষ হয়। এ সময় রেল লিংক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেনের উপস্থিতিতে ৭ মিটারের ঢালাইয়ের মধ্যদিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা পদ্মা সেতুতে রেল লাইন বসানোর কাজের সমাপ্ত ঘোষণা করে। রেলমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেতুতে ৪ এপ্রিল রেল চলবে বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (অফিস ম্যানেজার) মো. সাদমান শাহরিয়ার বলেন, আমরা কাজটি সফলভাবে করতে পেরে খুবই আনন্দিত। আগামী ৪ এপ্রিল রেলমন্ত্রী প্রকল্প এলাকায় আসবেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই দিন ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মন্ত্রীকে নিয়ে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথে পরীক্ষামূলক রেল চালানো হবে।
পদ্মা সেতুর রেল লিংক প্রকল্পের পরিদর্শন প্রকৌশলী সঞ্জয় চন্দ্র রায় জানান, পাথরহীন রেলপথ নির্মাণ করে আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম। সেতুর ওপর সফলভাবে রেললাইন নির্মাণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
এদিকে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)। পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা থেকে যশোর। পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব রেল পথে ৪২ কিলোমিটার। মাওয়া-ভাঙ্গা রেল পথের ৪২ কিলোমিটারের মধ্যে পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।