ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

হাঁসের ভ্রাম্যমাণ খামারে কৃষকের ভাগ্যবদল

হাঁসের ভ্রাম্যমাণ খামারে কৃষকের ভাগ্যবদল

প্রতিদিন সকাল হলেই বগুড়ার ধুনটে বাঙালি নদীতে শুরু হয় হাঁসগুলোর জলকেলী। শেরপুর উপজেলার সাপরজানি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক খোকা আকন্দের ভ্রাম্যমাণ খামারের হাঁস এগুলো। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভাসমান পদ্ধতিতে হাঁসের খামার পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এতে তার পরিবারে এসেছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা। কিনেছেন চার বিঘা জমি। এছাড়া গ্রামে বানিয়েছেন আধুনিক বাড়ি। খামারি খোকা আকন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেখাপড়া না জানা খোকা কর্মজীবনের শুরুতে বাবার দেড় বিঘা জমিতে কৃষি কাজ শুরু করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়েন। তাই কৃষির লোকসান কাটিয়ে উঠতে গড়ে তোলেন হাঁসের ভ্রাম্যমাণ খামার। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি জানান, সাধারণ খামারের চেয়ে ভ্রাম্যমাণ হাঁসের খামারে তুলনামূলক কম বিনিয়োগ করতে হয়। ভ্রাম্যমাণ খামারে অবকাঠামো ব্যয় নেই বললেই চলে। হাঁস কেনা বাবদ যা ব্যয় হয় সেটিকেই মূল বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। সারাদিন হাঁস চরিয়ে রাতে অস্থায়ীভাবে তৈরি ঘেরে হাঁসগুলো নেয়া হয়। কয়েক দিন পর খাবারের সন্ধানে হাঁসের পাল নিয়ে চলে যান অন্য এলাকায়। লাভজনক হওয়ায় এই পদ্ধতিতে হাঁস পালনে আগ্রহী হন তিনি। প্রায় ১১ বছর আগে ১৫ হাজার টাকায় কেনেন ৬০০ ক্যাম্বেল প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা। নদী-খাল-বিলের চরে বেড়ানোয় খাবার খরচও কম। এক বেলা খাবার দিলেই চলে। স্ত্রী ও সন্তানের সহযোগিতায় চার মাস পরিচর্যায় হাঁসগুলো ডিম দেয়া শুরু করে। তা অব্যাহতভাবেই চলছে। বর্তমানে এ খামার থেকে ডিম বিক্রি করে প্রতিমাসে গড়ে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করেন খোকা আকন্দ। স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন ও আব্দুল খালেক জানান, খোকার হাঁস পালনের এ উদ্যোগ একেবারেই ব্যতিক্রম এলাকার মধ্যে। প্রতিদিন অনেক মানুষ পানির ওপর ভাসমান এ খামার দেখতে আসেন। তার খামারের হাঁসগুলো পানির ওপর দল বেধে ঘুরে বেড়ায়। এতগুলো হাঁস একসঙ্গে দেখতেও ভালো লাগে। ইচ্ছা আছে এ বছরই এরকম একটি খামার গড়ার। ধুনট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাবিল ফারাবি বলেন, সাধারণ খামারগুলোতে হাঁসের খাবারের পেছনেই লাভের বড় একটা অংশ চলে যায়। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ খামারের ক্ষেত্রে তা হয় না। নদী-নালা ও খাল-বিলে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যায় বলে ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় সেগুলোর জন্য খাবার প্রায় কিনতেই হয় না। এছাড়া উন্মুক্ত পরিবেশ ও প্রাকৃতিক খাবার পেয়ে হাঁসের ডিম দেয়াও বেড়ে যায়। এসব খামারিদের ভ্যাকসিন, পরামর্শ, চিকিৎসাসেবাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত