কাঠামোগত সংস্কার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সাহায্য করবে
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ তার বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনীতির কারণে দেশটিকে কোভিড-১৯ মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করেছে। কিন্তু দেশটির অর্থনীতি এখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ, জ্বালানি চাহিদা, ব্যালান্স অব পেমেন্ট এবং রাজস্ব ঘাটতিসহ উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক তার ষান্মাসিক আপডেটে একথা বলেছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত‘বাণিজ্য সংস্কার : একটি জরুরি এজেন্ডা’ শীর্ষক বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট এপ্রিল ২০২৩-এ বলা হয়েছে, বাণিজ্য সংস্কার ও রপ্তানি বহুমুখীকরণসহ কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে পারলে তা বাংলাদেশকে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে এবং বাংলাদেশে একটি টেকসই গতিশীল প্রবৃদ্ধি মাঝারি মেয়াদজুড়েই ত্বরান্বিত হতে থাকবে বলে আশা করা য়ায়। ২০২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬.২ শতাংশে উঠবে বলেও বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সরকার অর্থবছর-২৩ এর জন্য জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল্লায়ে সেক বলেন, ইউক্রেনে রুশ অভিযান এবং বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বিশ্বব্যাপী দেশগুলোতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার ও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে বাংলাদেশের মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার ব্যাহত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত ও টেকসই অর্থনীতি জোরদার করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সংস্কারে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
আপডেট অনুযায়ী, পণ্যের উচ্চমূল্য মূল্যস্ফীতির চাপের কারণ। ব্যলান্স অব পেমেন্ট ঘাটতি অর্থবছর ২০২৩ এর প্রথমার্ধে ৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছে। একটি মাল্টিপল এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম এর কারণে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর নেতিবাচক চাপ ফেলে। অন্যদিকে, একক বাজার-ভিত্তিক বিনিময় হারের দিকে অগ্রসর হলে, এই বৈদেশিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে। অভ্যন্তরীণ ব্যাংকগুলো কঠোর তারল্য এবং ক্রমবর্ধমান নন পারফর্মিং ঋণের সাথে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য বাণিজ্য প্রতিযোগিতার উন্নতি, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ও প্রতিবেদনটির সহ-লেখক বার্নার্ড হ্যাভেন বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাতের অবদান প্রায় ৮৩ শতাংশ। তবে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুধুমাত্র একটি খাতের ওপর এই অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেছে।