আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনে স্বাধীনতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরসের ক্ষমতা খর্ব করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত হচ্ছে।
জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধন) বিল-২০২৩’-এ এমন বিধান রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনের ৪ নম্বর ধারার ৩ উপধারায় বলা আছে, আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হবে। কিন্তু সংশোধনীতে ‘স্বাধীন’ শব্দটি বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যমান পিপিপি সম্পর্কিত নীতিমালা, প্রবিধি, নির্দেশনা প্রণয়ন ও অনুমোদনের সঙ্গে নতুন করে গাইডলাইন ও কার্যপ্রণালি প্রণয়ন করার বিধান যুক্ত হচ্ছে। পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তার কার্যক্রমের জন্য সরাসরি বোর্ড অব গভর্নরসের কাছে দায়ী থাকার কথা বলা হয়েছে সংসদে উত্থাপিত বিলে।
বিদ্যমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরসের কাছে রয়েছে। সংশোধিত আইনে এই ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত হবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে। আর বিদ্যমান আইনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদনের ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরসের হাতে রয়েছে। এটি পরিবর্তন করে সরকারের হাতে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ ‘স্বাধীন’ হওয়ার বিষয়টি বাদ দেওয়া; বোর্ড অব গভর্নরসের সভার সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ; গাইডলাইনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালি প্রণয়ন অন্তর্ভুক্তকরণ; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিযুক্তি ও চাকরির শর্তাবলি বোর্ড অব গভর্নরসের পরিবর্তে সরকার কর্তৃক স্থিরকৃত হওয়া, চুক্তি স্বাক্ষরের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকল্প কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান, আইনের ব্যাখ্যা প্রদানের বিষয়টি বোর্ড অব গভর্নরসের পরিবর্তে সরকারের ওপর ন্যস্ত করা ও প্রবিধান প্রণয়নে সরকারের পুর্বানুমোদন গ্রহণের জন্য আইনটি সংশোধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।